
এক বুযুর্গ কোনো এক দোকানে কিছু পন্য কিনতে গেলেন। পণ্য খরীদ করার পর যখন তিনি দোকানি কে টাকা দিলেন তখন দোকানি টাকাটা হাতে নিয়ে পরখ করতে লাগলো। কিছু সময় পর বললো বাবা!!! এটা জাল নোট। এটা অচল। দোকানির বক্তব্য শুনে বুযুর্গ হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন। দোকানদার বললো, আপনি কাঁদবেন না। আমি আপনাকে বিনে পয়সায় পণ্য দেবো। - না নাহ!! আমার পণ্যের প্রয়োজন নেই। তিনি কেঁদেই চললেন। আশে-পাশে লোকজন জড়ো হয়ে গেলো।ভীড় ঠেলে একজন সামনে এসে বললো, বাবাজী!!! এতো কাঁদবেন না। সে যদি আপনাকে পণ্য নাও দেয় তাহলে আমি নিজের টাকা দিয়ে আপনাকে পণ্য কিনে দেবো। আপনি কান্না বন্ধ করে পণ্য নিয়ে যান। উত্তরে তিনি বললেন, বাবা!! পণ্য নিতে না পেরে আমি কাঁদছি না। আমিতো এই জন্য কাঁদছি যে, আমি ভেবেছিলাম, আমার কাছে কিছু টাকা আছে । আমি সেগুলোকে খাঁটি মনে করেছিলাম। কিন্তু আমি যখন সেই টাকা দোকানদারের কাছে আনলাম, দোকানদার তা পরীক্ষা করে বললো, এটা জাল টাকা। তখন আমার ভাবনা এলো, হায় হায়!!! আমি তো পৃথিবীতে যে আমল করছি তাকে খাঁটি মনে করছি। আত্মতৃপ্তিবোধ করছি আমার ভাণ্ডারেও বেশ আমল আছে। হাশরের মাঠে যদি আল্লাহ আমাকে বলেন, ও বান্দা!! তুমি যতো আমল সাথে এনেছো তার সব ভেজাল!! সব ভেজাল!! তাহলে আমার কী হবে? পৃথিবীতে তো আমি অন্য টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে পারবো। কিন্তু আখেরাতে তো অন্য আমল নেয়ারও সুযোগ পাবো না। একথা ভেবেই আমার কান্না চলে এলো। লোকেরাও তার কথা শুনে কাঁদতে লাগলো। বন্ধুরা!!! মাঝে-মাঝে মনে ভাবনা জাগে। এইযে টুটা- ফাটা আমল আমরা দৈনন্দিন করছি সেগুলো সব গৃহীত হবে তো প্রভুর দরবারে? আমাদের নামায? রোজা? তা‘লিম? সব? নাকি আকাশে ওঠার আগেই আমাদের নাকে-মুখে নিক্ষেপ করা হচ্ছে দলা পাকিয়ে? নিষ্কৃতি পাবো তো তাঁর দরবারে? কাল হাসরে? ভাবলে খুব ভয় হয়। আমাদের আমলগুলো সুন্নাতে নববীর সাথে মিলছে তো? আমাদের লেবাস-পোষাক মদীনা ওয়ালার মতো হচ্ছে তো? কখনো ভাবনা জাগে। আবার ভুলে যাই। ইশ!!! কেমন হবে সেদিন? যদি আমার আমলগুলোও ভেজাল প্রমাণিত হয়? হে প্রভু!! আমাদেরকে নির্ভেজাল আমল করার তৌফিক দান করো। আমীন।
No comments:
Post a Comment