Buy IP

********** Welcome to Buy ip **********

Monday, May 30, 2016

গাট্টিওয়ালা



“এই গাট্টিওয়ালাদের মসজিদে পড়ে খাওয়া ঘুম ছাড়া আর কোন কাজ নাই। আল্লাহ্‌ বলেছেন নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে রুজির তালাশ কর। আর এরা শুধু মসজিদে পড়ে থাকে।”
.
বন্ধু, আল্লাহ্‌ তা’য়ালা কোন সুরার কত নম্বর আয়াতে এই হুকুম দিয়েছেন? এবং উক্ত আয়াতের হুবহু বাংলা অর্থ, শানে নুযুল ও ব্যাখ্যা একটু বল প্লিজ।
.
আরে এতসব কি জানি? আমাদের পীর সাহেবের কাছ থেকে শুনেছি, নামায পড়ে মসজিদে পড়ে থাকতে নেই, রুজির তালাশ করতে।
.
বন্ধু, তোর পীর সাহেব কি আস্হাবে সুফ্ফার সেই সব সাহাবিদের কথা জানেননা, যারা রাসুলুল্লাহ (স:)-এর মসজিদে নববীতে রাত দিন পড়ে থেকে রাসুলুল্লাহ (স:)-এর কাছ থেকে হাদিস শিক্ষা করতেন। আর কোথা হতে কোন হাদিয়া আসলে সেটা দিয়েই ক্ষুধ-পিপাসা নিবারণ করতেন। যাদের না কোন ক্ষেত ছিল, না ছিল কোন ব্যবসা, না চাকরী।
আর তোর এলাকার মসজিদে যে গাট্টিওয়ালাদের দেখতেছিস, ওরা তো মাত্র চল্লিশ দিনের জন্য মসজিদে মসজিদে থাকবে। তারপর তারা ফিরে যাবে তাদের এলাকায়, আগের মত ব্যবসা, চাকরী, ক্ষেত-কৃষিতে লিপ্ত হবে। পার্থক্য এতটুকু হবে যে, আগে তারা ব্যবসা, চাকরী, ক্ষেত-কৃষি করতো শুধু পার্থিব লাভের আশায়। আর এখান থেকে ফিরে গিয়ে পার্থিব লাভের পাশাপাশি আখেরাতের লাভের আশায়ও এসব করবে। 
.
বন্ধু তুই এই গাট্টিওয়ালাদের খাওয়া-ঘুমই দেখলি?! দেখলিনা এই খাওয়া-ঘুমের সেই আলো, যেটা দিয়ে তারা তাদের জীবনের ছোট-বড় সব গুনাহ দেখতে পায়, আর সেগুলো থেকে তাওবা করে ফিরে আসে রব্বে করিমের পদতলে। দেখলিনা সূর্যকিরণের সাথে প্রতিযোগিতা করে সজাগ হওয়া সেই চোখ দু’টুকে, যেগুলো আগে শুধু তপ্ত রোদ্দুরে সজাগ হত।
.
দেখেছিস বন্ধু,
এই খাওয়া আর ঘুমের মধ্যে কী এক প্রভাব, চার মাস আগের অহংকারী চার মাস পরে বিনয়ী হয়ে যায়! যার কিনা কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস আগে মাথায় টুপি দিতে লজ্জাবোধ করত, তার কি হয়ে গেল যে, এখন তার আপাদমস্তক সুরতে নববী! কী আশ্চর্য ধরণের এই খাওয়া-ঘুম, তুই খেয়াল করেছিস!? 
.
ওহ,, দুঃখিত,
এতো সব দেখার আর খেয়াল করার তোর সময় কোথায়। পীর সাহেবের যে নিষেধ আছে।
.
তারপরও তোকে কিছু দলিল শুনাই। আমার কথা মানার দরকার নেই। তোর পিরের ধোকার প্রাচীর ভেঙে এই কথাগুলো মানতে পারিস কিনা দেখ...।
.
ইমাম বুখারী (রহঃ) বোখারী গ্রন্থে একটি অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন,
‘পুরুষদের জন্য মসজিদে ঘুমানো’। 
এ অধ্যায়ে দলিল হিসেবে তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১- সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. নিজের সম্পর্কে বলেন,
,তিনি ছিলেন অবিবাহিত যুবক। স্ত্রী-পুত্র কেউ ছিল না। তখন তিনি মসজিদে নববীতেই (রাতে ও দিনে) ঘুমাতেন। [সহীহ বুখারী]
-
জামে তিরমিযী (তিরমিযী শরীফ) ও ইবনে আবী শাইবার বর্ণনায় বক্তব্যটি তুলে ধরা হয়েছে এভাবে, ‘আমারা একদল যুবক রাতে ও দিনে মসজিদে শয়ন করতাম’। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেজ আইনী (রহ.) বলেন,
… এতে স্থানীয় লোকদের জন্যও (যারা মুসাফির নয়) মসজিদে ঘুমানো জায়েয বলে প্রমাণিত হয়। (উমদাতুল কারী)।
-
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন,
পুরুষদের জন্য মসজিদে ঘুমানো জায়েয। এটাই অধিকাংশের মত। [ফাতহুল বারী]
::
২- হযরত সাহল ইবনে সা‘দ রা. বলেন,
একদিন রাসূলুল্লাহ সা. হযরত ফাতেমার ঘরে এসে আলীকে (রা.) পাননি। জিজ্ঞেস করলেন, আলী কোথায়? ফাতেমা বললেন, আমাদের দু’জনে মধ্যে কিছু রাগারাগি হয়েছে। ফলে তিনি রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. একজনকে বললেন: তাকে একটু খুঁজে দেখ, কোথায়? লোকটি এসে জানাল, আলী মসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। রাসূলুল্লাহ সা. গিয়ে দেখলেন আলী শুয়ে আছেন। শরীরের এক পাশ থেকে চাদর পড়ে গেছে। আর গায়ে ধুলো-বালি লেগে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর গায়ের বালি ঝেঁড়ে দিচ্ছেন আর (রসিকতার স্বরে) বললেন ‘আবু তোরাব’ (মাটির পিতা) উঠ উঠ!
[সহীহ বুখারী]।
::
৩- হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ বলেন,
হযরত আবু যর (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর খেদমত করতেন। অবসর হলেই মসজিদে চলে যেতেন। মসজিদই ছিল তাঁর ঘর। সেখানেই ঘুমাতেন।
-
একদিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে গিয়ে দেখলেন, আবু যর মসজিদে শুয়ে আছেন। তিনি তাকে পা দিয়ে স্পর্শ করলেন। আবু যর (রা.) উঠে বসলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এখানে ঘুমিয়ে কেন? আবু যর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কোথায় ঘুমাব আর ? এ ছাড়া কি আমার আর কোন ঘর আছে?
[ মুসনাদে আহমদ হা.২৬৯২৮, মাজমাউয যাওয়াইদ হা. ২০২৩]
-
অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমত করতেন। যখনই অবসর হতেন, মসজিদে এসে শুয়ে আরাম করতেন।
[ আল মুজামুল আওসাত, তাবারানী, মাজমাউয যাওয়াইদ হা. ২০২৪]
-
মোট কথা হযরত আবু যর (রা.)- এর থাকার মত কোন ঘরই ছিল না। তিনি সব সময়ই মসজিদে থাকতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন দিনই তাঁকে মসজিদে ঘুমাতে নিষেধ করেননি।
::::
বন্ধু, 
এবার তোর বিবেক-বুদ্ধিকে একটু জাগ্রত কর।


Saturday, May 28, 2016

করলা

korola-01-newsnextbd

করলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি এবং সি রয়েছে। একই সঙ্গে এতে বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এ জন্য এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে করলার পর্যাপ্ত ভেষজগুণ রয়েছে।
জ্বর ও শরীরের কোনো অংশ ফুলে গেলে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে করলা ভালো পথ্য। তা ছাড়া করলার তরকারি বাত রোগে, লিভারে ও প্লীহার রোগে এবং ত্বকের অসুখে উপকার দেয়। নিয়মিত করলা খেলে জ্বর, হাম ও বসন্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
যেভাবে তৈরি করবেন করলার জুস
গাঢ় সবুজ রঙের কাঁচা করলা নিয়ে টুকরো করে কাটতে হবে। বিচিগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। তিতা কমাতে চাইলে করলা কেটে ঠাণ্ডা লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ব্লেন্ডারে জুস তৈরি করে নিতে হবে। প্রয়োজন মত লবণ দেয়া যেতে পারে।
উপকারিতা
তিতা করলার রস পানে অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের কোষ ধ্বংস হয় বলে সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলার রস সহায়তা করে। দাঁত ও হাড় ভালো রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ও চোখের সমস্যা সমাধানে করলার বিটা ক্যারোটিন খুবই উপকারী।
ত্বক ও চুল ভালো রাখার জন্যও একান্ত  জরুরি। চর্মরোগ সারাতে সাহায্য করে। এছাড়া করলার রস ক্রিমি দূর করে।


তারাবীহ ২০ রাকাত


তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যা নিয়ে কথিত আহলে হাদিসদের মিথ্যাচারঃ একটি দলিল ভিত্তিক বিশ্লেষণ
ভূমিকা
আমাদের দেশের কিছু আহলে হাদিস নামধারীরা তারাবীহের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত। তাদের দাবী সহীহ হাদিসের ভিত্তিতে কেবল ৮ রাকাত তারাবীহ নামায প্রমাণিত। দলিল হিসেবে কিছু হাদিস পেশ করে যার কোনটিই স্পষ্ট তারাবীহকে বুঝায়না, বা হাদিসগুলি একেবারেই দুর্বল। এরপরও বিশ রাকাত তারাবীহ যা হাদিস ও সাহাবায়ে কিরামের সর্ব সম্মত ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত একে অস্বীকার করে যায় নিতান্তই ঘাড়ত্যারামী করে। রামাযান মাসে জাতিকে সুন্নত আমল থেকে বিরত রাখে এক নিকৃষ্ট পন্থায়। সেই সকল ভ্রান্ত অনুসারীদের দাবি-যুক্তি খন্ডনের নিমিত্তে আমার এই প্রয়াস। আলোচনার সুবিধার্থে লেখাটি দু’টি পর্বে বিভক্ত করেছি। প্রথম পর্বে ওদের দলিলকৃত হাদিস উল্লেখ করে তার জবাব প্রদান। আর দ্বিতীয় পর্বে তারাবীহ নামায বিশ রাকাত হাদিস ও সাহাবাদের সর্বসম্মত ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত এ বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সত্য জানার তৌফিক দিন।
৮ রাকাত তারাবীহের পক্ষে কথিত আহলে হাদিসদের দলিলসমূহ
এক নং দলিল
ﻦﻋ ﻲﺑﺃ ﺔﻤﻠﺳ ﺪﺒﻋ ﻦﺑ ﻪﻧﺃ ﻦﻤﺣﺮﻟﺍ ﻩﺮﺒﺧﺃ ﻪﻧﺃ : ﻝﺄﺳ ﺔﺸﺋﺎﻋ ﻲﺿﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻒﻴﻛ ﺎﻬﻨﻋ ﺓﻼﺻ ﺖﻧﺎﻛ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻢﻠﺳ ﻭ ﻲﻓ ﻥﺎﻀﻣﺭ ؟ ﺎﻣ ﺖﻟﺎﻘﻓ ﻥﺎﻛ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻭ ﻢﻠﺳ ﺪﻳﺰﻳ ﻥﺎﻀﻣﺭ ﻲﻓ ﻻﻭ ﻲﻓ ﻩﺮﻴﻏ ﻯﺪﺣﺇ ﻰﻠﻋ ﺓﺮﺸﻋ ﺔﻌﻛﺭ ﺎﻌﺑﺭﺃ ﻲﻠﺼﻳ ﻞﺴﺗ ﻼﻓ ﻦﻋ ﻦﻬﻟﻮﻃﻭ ﻦﻬﻨﺴﺣ ﻢﺛ ﺎﻌﺑﺭﺃ ﻲﻠﺼﻳ ﻞﺴﺗ ﻼﻓ ﻦﻋ ﻦﻬﻟﻮﻃﻭ ﻦﻬﻨﺴﺣ ﻢﺛ ﻲﻠﺼﻳ ﺎﺛﻼﺛ ﺖﻟﺎﻗ . ﺔﺸﺋﺎﻋ ﺖﻠﻘﻓ ﻝﻮﺳﺭﺎﻳ ﻡﺎﻨﺗﺃ ﻪﻠﻟﺍ ﻞﺒﻗ ﻥﺃ ﺮﺗﻮﺗ . ؟ ﻝﺎﻘﻓ ﺎﻳ ﻥﺇ ﺔﺸﺋﺎﻋ ﻲﻨﻴﻋ ﻥﺎﻣﺎﻨﺗ ﻻﻭ ﻡﺎﻨﻳ ﻲﺒﻠﻗ ( ﺏﺍﻮﺑﺃ -ﻯﺭﺎﺨﺒﻟﺍ ﺢﻴﺤﺻ ،ﺪﺠﻬﺘﻟﺍ ﻡﺎﻴﻗ ﺏﺎﺑ ﻲﺒﻨﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻢﻠﺳ ﻭ ﻞﻴﻠﻟﺎﺑ ﻲﻓ ﻩﺮﻴﻏﻭ ﻥﺎﻀﻣﺭ 1/154 )
হযরত আবু সালমা বিন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত তিনি আয়েশা রাঃ এর কাছে জানতে চান নবীজী সাঃ এর নামায কেমন হত রামাযান মাসে? তিনি বললেন-রাসূল সাঃ রামাযান ও রামাযান ছাড়া ১১ রাকাত থেকে বাড়াতেন না। তিনি ৪ রাকাত পড়তেন তুমি এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জানতে চেওনা। তারপর পড়তেন ৪ রাকাত তুমি এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা বিষয়ে জানতে চেওনা, তারপর পড়তেন ৩ রাকাত। হযরত আয়েশা রাঃ বলেন-তখন আমি বললাম-হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার পূর্বে শুয়ে যান? তিনি বললেন-হে আয়েশা! নিশ্চয় আমার দু’চোখ ঘুমায় আমার কলব ঘুমায়না। (সহীহ বুখারী-১/১৫৪)
জবাব
১. এই হাদিসে ইযতিরাব তথা অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা থাকায় এ দিয়ে দলিল দেয়া ঠিক নয়। আল্লামা কুরতুবী রহঃ বলেন-আমি আয়েশা রাঃ এর এই বর্ণনাটি অনেক আহলে ইলমদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি অনেকেই এতে অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা আছে বলে মত প্রকাশ করেছেন। (ফাতহুল বারী শরুহুল বুখারী-৩/১৭)
২. খোদ হযরত আয়েশা রাঃ থেকে ১৩ রাকাত তারাবীহের কথা সহীহ সনদে বর্ণিত আছে। সুতরাং হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা দূর করতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন-“সঠিক কথা হল এ ব্যাপারে আমি যা উল্লেখ করেছি এগুলো সব ভিন্ন সময় ও ভিন্ন পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল” অর্থাৎ নবীজী একেক সময় একেক রাকাত নামায পড়েছেন তারাবীহের ক্ষেত্রে।(ফাতহুল বারী-৩/১৭)
এর মাধ্যমে কথিত আহলে হাদিসদের “৮ রাকাতের মাঝেই তারাবীহ নামায সীমাবদ্ধ এরচে’ বেশী তারাবীহ নামায নেই” এই দাবিটি বাতিল হয়ে যাচ্ছে। খোদ আহলে হাদিসদের আলেম মাওলানা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী বলেন-নিশ্চয় একথা প্রমাণিত যে রাসূল সাঃ ১৩ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন ফজরের দু’রাকাত সুন্নত ছাড়াই।(তুহফাতুল আহওয়াজী-২/৩)
৩. এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হল নবীজী সাঃ এক সালামে ৪, ৪ রাকাত করে তারাবীহ আর শেষে এক সালামে ৩ রাকাত বিতর পড়েছেন, অথচ কথিত আহলে হাদিসদের আমল এর বিপরীত। তারা তারাবীহ দুই দুই রাকাত করে পড়েন। আর বিতর এক রাকাত বা তিন রাকাত দুই সালামে পড়েন। সুতরাং যেই হাদিস দলিলদাতাদের কাছে আমলহীন এর দ্বারা দলিল দেয়া যায়?
৪. আসল কথা হল এই যে, এই হাদিসটি তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট। এতে তারাবীহের কথা বর্ণিত নয়। নিম্নে এ ব্যাপারে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করা হল।
“হাদিসে মূলত তাহাজ্জুদের বর্ণনা এসেছে” একথার দলিল
১. হাদিসের শব্দ ﺎﻣ ﻥﺎﻛ ﻝﻮﺳﺭ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻭ ﻢﻠﺳ ﺪﻳﺰﻳ ﻥﺎﻀﻣﺭ ﻲﻓ ﻻﻭ ﻲﻓ ﻩﺮﻴﻏ (নবীজী সাঃ রামাযান ও রামাযান ছাড়া অন্য সময় বাড়াননা) এটাই বুঝাচ্ছে যে, প্রশ্নটি করা হয়েছিল রামাযান ছাড়া অন্য সময়ে যে নামায নবীজী পড়তেন তা রামযানে বাড়িয়ে দিতেন কিনা? এই প্রশ্নটি এজন্য করা হয়েছে যেহেতো বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে রাসূল সাঃ রামাযানে আগের তুলনায় অনেক নামায পড়তেন ও ইবাদত করতেন, তাই এই প্রশ্নটি করাটা ছিল স্বাভাবিক। আর রামযান ছাড়া কি তারাবীহ আছে? যে রামাযানের আগেই তারাবীহ আর বিতর মিলিয়ে ১৩ রাকাত নবীজী পড়তেন? নাকি ওটা তাহাজ্জুদ? তাহাজ্জুদ হওয়াটাই কি সঙ্গত নয়? সুতরাং এটাই স্পষ্ট বুঝা যায় তারাবীহ নয় প্রশ্ন করা হয়েছে তাহাজ্জুদ নিয়ে যে, নবীজী তাহাজ্জুদের নামায রামাযান ছাড়া যে ক’রাকাত পড়তেন তা থেকে রামাযানে বাড়িয়ে পড়তেন কিনা? এর জবাবে আয়েশা রাঃ বললেন-১৩ রাকাত থেকে বাড়াতেননা তাহাজ্জুদ নামায।
২. এই হাদিসের শেষাংশে এই শব্দ আছে যে ﺖﻟﺎﻗ ﺔﺸﺋﺎﻋ ﺖﻠﻘﻓ ﻝﻮﺳﺭﺎﻳ ﻡﺎﻨﺗﺃ ﻪﻠﻟﺍ ﻥﺃ ﻞﺒﻗ ﺮﺗﻮﺗ ؟ (তারপর আয়েশা রাঃ বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার আগে ঘুমান?) এই বিষয়টি তারাবীহ এর ক্ষেত্রে কল্পনাতীত যে নবীজী সাঃ তারাবীহ নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েন আর সাহাবীরা বিতর পড়ার জন্য নবীর জন্য অপেক্ষমাণ থাকেন। বরং এটি তাহাজ্জুদ এর ক্ষেত্রে হওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত নয়কি?
৩. মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর অধ্যায়ে উল্লেখ করেননি। বরং তাহাজ্জুদ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। ইমাম মুহাম্মদ বিন নসর মারওয়াজী তার কিতাব “কিয়ামুল লাইল” এর ﺩﺪﻋ“ ﻰﺘﻟﺍ ﺕﺎﻌﻛﺮﻟﺍ ﻡﻮﻘﻳ ﺎﻬﺑ ﻡﺎﻣﻻﺍ ﺱﺎﻨﻠﻟ ﻰﻓ ”ﻥﺎﻀﻣﺭ(রামযানে ইমাম কত রাকাত তারাবীহ পড়বে) অধ্যায়ে অনেক হাদিস আনলেও আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত এই হাদিসটি সহীহ হওয়া সত্বেও তিনি আনেননি। সাথে এদিকে কোন ইশারাও করেননি।
৪. মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যার অধ্যায়ের পরিবর্তে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। যেমন ইমাম বুখারী রহঃ তার প্রণিত বুখারী শরীফে এই হাদিসটি নিম্ন বর্ণিত অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন-
(ক) বিতর অধ্যায়-(১/১৩৫)
(খ) নবীজী সাঃ এর রাতে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতা রামযানে ও রামযান ছাড়া-(১/১৫৪)
(গ) রামযানে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতার ফযীলত অধ্যায়-(১/২৬৯)
(ঘ) নবীজী সাঃ এর দু’চোখ ঘুমায় মন ঘুমায়না-(১/৫০৩)
প্রথম অধ্যায়ে বিতরের রাকাত সংখ্যা আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে তাহাজ্জুদ রামাযানে বেশি পড়তেন কিনা তা জানা আর তৃতীয় অধ্যায়ে রামাযানে বেশি বেশি নামাযের ফযীলত আর চতুর্থ অধ্যায়ে নবীজী ঘুমালে যে তার অযু ভাঙ্গেনা তার কারণ বর্ণনা জন্য হাদিস আনা হয়েছে। তারাবীহের রাকাত সংখ্যা বুঝানোর জন্য কোথায় এসেছে এই হাদিস???
৫. আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী এই হাদিসের ব্যাক্ষায় বলেন-আর আমার কাছে এটি প্রকাশিত হয়েছে যে, ১১ রাকাতের থেকে না বাড়ানোর রহস্য এটি যে, নিশ্চয় তাহাজ্জুদ ও বিতরের নামায রাতের নামাযের সাথে খাস। আর দিনের ফরয যোহর ৪ রাকাত আর আসর সেটাও ৪ রাকাত আর মাগরীব হল ৩ রাকাত যা দিনের বিতর। সুতরাং সাযুজ্যতা হল-রাতের নামায দিনের নামাযরের মতই সংখ্যার দিক থেকে সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিতভাবে। আর ১৩ রাকাতের ক্ষেত্রে সাযুজ্যতা হল-ফযরের নামায মিলানোর মাধ্যমে কেননা এটি দিনের নামাযই তার পরবর্তী নামাযের জন্য।(ফাতহুল বারী শরহুল বুখারী-৩/১৭)
ইবনে হাজার রহঃ এর এই রহস্য বা হিকমত বর্ণনা কি বলছেনা এই হাদিস দ্বারা তাহাজ্জুদ উদ্দেশ্য তারাবীহ নামায নয়? এই বক্তব্যে তাহাজ্জুদের কথা স্পষ্টই উল্লেখ করলেন ইবনে হাজার রহঃ।
তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের মাঝে পার্থক্য
কথিত আহলে হাদিসরা বলেন “তাহাজ্জুদ আর তারাবীহ একই” তাদের এই দাবিটি ভুল নিম্নবর্ণিত কারণে
১. তাহাজ্জুদের মাঝে ডাকাডাকি জায়েজ নয় তারাবীহতে জায়েজ।
২. তারাবীহের সময় ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদের সময় নির্ধারিত নয় তবে উত্তম ঘুমের পর।
৩. মুহাদ্দিসীনে কিরাম তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের অধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন লিখেছেন।
৪. তাহাজ্জুদ নামাযের হুকুম কুরআন দ্বারা প্রমাণিত যথা সূরা ইসারার ৭৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ِﻞْﻴَّﻠﻟﺍ َﻦِﻣَﻭ ِﻪِﺑ ْﺪَّﺠَﻬَﺘَﻓ َﻚَّﻟ ًﺔَﻠِﻓﺎَﻧ ﻰَﺴَﻋ ﻥَﺃ َﻚَﺜَﻌْﺒَﻳ َﻚُّﺑَﺭ ﺎًﻣﺎَﻘَﻣ ﺍًﺩﻮُﻤْﺤَّﻣ অর্থাৎ আর রাতে তাহাজ্জুদ পড় এটি তোমার জন্য নফল, অচিরেই তোমাকে তোমার রব প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।
আর তারাবীহের ব্যাপারে আল্লাহর নবী বলেন-নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা রামযানের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন আর আমি তোমাদের উপর এতে কিয়াম করাকে সুন্নত করেছি (সুনানে নাসায়ী-১/৩০৮)
সুতরাং বুঝা গেল তাহাজ্জুদ আল্লাহর আয়াত আর তারাবীহ নবীজীর বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত।
৫. তাহাজ্জুদের হুকুম মক্কায় হয়েছে আর তারাবীহের হুকুম মদীনায় হয়েছে।
৬. ইমাম আহমাদ রহঃ ও তারাবীহ তাহাজ্জুদ আলাদা বিশ্বাস করতেন(মাকনা’-১৮৪)
৭. ইমাম বুখারী রহঃ এর ক্ষেত্রে বর্ণিত তিনি রাতের প্রথমাংশে তার সাগরীদদের নিয়ে তারাবীহ পড়তেন আর শেষ রাতে একাকি তাহাজ্জুদ পড়তেন। (ইমাম বুখারী রহঃ এর জীবনী)
৮. তাহাজ্জুদ এর নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা রাসূল সাঃ থেকে প্রমাণিত অর্থাৎ বিতরসহ বেশি থেকে বেশি ১৩ রাকাত আর কমপক্ষে ৭ রাকাত। আর তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যার ক্ষেত্রে খোদ আহলে হাদিস ইমামদের স্বাক্ষ্য যে এর কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নবীজী সাঃ থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত নয়।
২ নং দলিল
ﻦﻋ ﻦﺑ ﺮﺑﺎﺟ ﺪﺒﻋ ﻪﻠﻟﺍ ﻝﺎﻗ : ﺎﻨﺑ ﻰﻠﺻ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻢﻠﺳ ﻭ ﻲﻓ ﻥﺎﻤﺛ ﻥﺎﻀﻣﺭ ﺕﺎﻌﻛﺭ ﺎﻤﻠﻓ ﺮﺗﻮﻟﺍﻭ ﻦﻣ ﻥﺎﻛ ﺎﻨﻌﻤﺘﺟﺍ ﺔﻠﺑﺎﻘﻟﺍ ﻲﻓ ﺪﺠﺴﻤﻟﺍ ﺝﺮﺨﻳ ﻥﺃ ﺎﻧﻮﺟﺭﻭ ﺎﻨﻴﻟﺇ ﻢﻠﻓ ﻝﺰﻧ ﻲﻓ ﻰﺘﺣ ﺪﺠﺴﻤﻟﺍ ﻰﻠﻋ ﺎﻨﻠﺧﺪﻓ ﺎﻨﺤﺒﺻﺃ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ ﻭ ﺎﻨﻠﻘﻓ ﻢﻠﺳ : ﻪﻟ ﺎﻳ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﺝﺮﺨﺗ ﻥﺃ ﺎﻧﻮﺟﺭ ﺎﻨﻴﻟﺇ ﺎﻨﺑ ﻞﺼﺘﻓ : ﻝﺎﻘﻓ ﺖﻫﺮﻛ ﺐﺘﻜﻳ ﻥﺃ ﻢﻜﻴﻠﻋ ﺮﺗﻮﻟﺍ ( ﻡﺎﻴﻗ 90-ﻞﻴﻠﻟﺍ )
হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-রাসূল সাঃ আমাদের সাথে রামযানে ৮ রাকাত নামায ও বিতর নামায পড়লেন, তারপর যখন পরদিন হল আমরা মসজিদে একত্রিত হলাম এবং আকাংখা করলাম নবীজী সাঃ আমাদের কাছে আসবেন। আমরা মসজিদে অবস্থান করতে লাগলাম। প্রভাত হয়ে গেল। তখন আমরা গেলাম নবীজী সাঃ এর কাছে। তাকে বললাম-হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আকাংখী ছিলাম আপনি আমাদের কাছে যাবেন এবং আমাদের নিয়ে নামায পড়বেন, তখন তিনি বললেন-আমি এটি পছন্দ করছিলামনা যে, তোমাদের উপর বিতর ফরয হয়ে যাক।(কিয়ামুল লাইল-৯০)
জবাব
এই হাদিসটি নিয়ে কথিত আহলে হাদিসরা সবচে’ বেশি খুশি হতে দেখা যায়। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল এই হাদিসটি দুর্বল। শুধু একজন নয় এই হাদিসের তিনজন রাবীর ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসীনে কিরাম বলেছেন তারা গ্রহণযোগ্য নয়। দেখুন মুহাদ্দিসীনে কিরাম কি বলে এই হাদিসের বর্ণনাকারীদের ব্যাপারে।
ইবনে হুমাইদ রাজী
১. হাফেজ জাহাবী রহঃ বলেন-তিনি দুর্বল
২. ইয়াকুব বিন শি’বা রহঃ বলেন-তিনি অনেক অগ্রহণীয় হাদিস বর্ণনা করেন।
৩. ইমাম বুখারী রহঃ বলেন-এতে আপত্তি আছে।
৪. আবু জুরআ রহঃ বলেন-তিনি মিথ্যাবাদী।
৫. ইসহাক কু’সজ রহঃ বলেন-আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি মিথ্যাবাদী।
৬. সালেহ জাযরাহ রহঃ বলেন-প্রত্যেক বিষয়ে সে হাদিস বর্ণনা করে। আল্লাহর উপর অধিক অপবাদ আরোপকারী আমি তাকে ছাড়া কাউকে দেখিনি। সে লোকদের হাদিস পরিবর্তন করে ফেলে।
৭. আল্লামা ইবনে খারাশ রহঃ বলেন-আল্লাহর কসম সে মিথ্যাবাদী
৮. ইমাম নাসায়ী রহঃ বলেন-সে গ্রহণযোগ্য নয়। (মিযানুল ই’তিদাল-৩/৪৯-৫০)
ইয়াকুব বিন আব্দুল্লাহ আশআরী
# ইমাম দারা কুতনী রহঃ বলেন-সে শক্তিশালী নয় (মিযানুল ই’তিদাল-৩/৩২৪)
ঈসা বিন জারিয়া
১. আল্লামা ইয়াহইয়া বিন মায়ীন রহঃ বলেন-তার কাছে অগ্রহণীয় হাদিস আছে।
২. ইমাম নাসায়ী বলেন-তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৩. ইমাম নাসায়ী বলেন-তার হাদিস পরিত্যাজ্য।
৪. আবু দাউদ রহঃ বলেন-তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৫. আল্লামা জাহাবী বলেন-তিনি দুর্বলদের মাঝে শামীল (মিযানুল ই’তিদাল-২/৩১১)
এছাড়া এ হাদিসটি “বুলুগুল মারাম” কিতাবে হযরত জাবের রাঃ থেকেই বর্ণিত কিন্তু সেখানে রাকাত সংখ্যার কথা উল্লেখ নেই। দেখুন বুলুগুল মারাম-৪২-৪৩
এছাড়াও এ হাদিসে আরেকটি সমস্যা আছে, তাহল-এই হাদিসে বিতর ফরয হবার আশংকার কথা বলা হয়েছে অথচ অন্য সহীহ হাদিসে তারাবীহ ফরয হয়ে যাবার আশংকা উল্লেখে করা হয়েছে। (মিযানুল ই’তিদাল-২/৪২-৪৩)
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম এই হাদিস দিয়ে হুকুম প্রমাণিত করার ভার। এরকম দুর্বল হাদিস দিয়ে এরকম মতবিরোধপূর্ণ বিষয় কি প্রমাণিত হয়?
৩ নং দলিল
ﻲﻨﺛﺪﺣ ﻭ ﻚﻟﺎﻣ ﻦﻋ ﻦﻋ ﻦﺑ ﺪﻤﺤﻣ ﻦﻋ ﻒﺳﻮﻳ ﻦﺑ ﺐﺋﺎﺴﻟﺍ ﻪﻧﺃ ﺪﻳﺰﻳ ﻝﺎﻗ ﺮﻣﺃ ﺮﻤﻋ ﻦﺑ ﺏﺎﻄﺨﻟﺍ ﺐﻌﻛ ﻦﺑ ﻲﺑﺃ ﻱﺭﺍﺪﻟﺍ ﺎﻤﻴﻤﺗﻭ ﻥﺃ ﺎﻣﻮﻘﻳ ﺱﺎﻨﻠﻟ ﻯﺪﺣﺈﺑ ﺔﻌﻛﺭ ﺓﺮﺸﻋ ( ﺄﻃﻮﻣ 98-ﻚﻟﺎﻣ )
মুহাম্মদ বিন ইউসুফ সায়েব বিন ইয়াজীদ রহঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব রাঃ ও তামীমে দারী রাঃ কে মানুষের সাথে ১১ রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।(মুয়াত্তা মালিক-৯৮)
জবাব
এই হাদিস দিয়েও দলিল দেয়া ঠিক নয়। কারণ-
১. হাদিসটির শব্দে পরস্পর বিরোধীতা রয়েছে। যেমন এই হাদিসের সূত্রের একজন বর্ণনাকারী মুহাম্মদ বিন ইউসুফ তার সাগরীদ ৫ জন। তার মধ্যে ৩জন ১১ রাকাত আর ১জন ১৩ রাকাত ও ১জন ২১ রাকাতের বর্ণনা নকল করেন। এছাড়া যারা ১১রাকাতের কথা বর্ণনা তাদের বর্ণনার শব্দেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। যথা-
ক. ইমাম মালিক এনেছেন ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব রাঃ ও তামীমে দারী রাঃ কে মানুষের সাথ ১১ রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
খ. হযরত ইয়াহইয়া আল কাত্তান বর্ণনা করেন-ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব ও তামিমে দারী এর কাছে লোকদের একত্র করেন আর তারা দু’জন ১১ রাকাত নামায পড়াতেন।
গ. আব্দুল আজীজ বিন মুহাম্মদ রহঃ এর বর্ণনায় এসেছে-আমরা হযরত ওমর রাঃ এর আমলে ১১ রাকাত নামায পড়তাম।
বর্ণনাকারীর বর্ণনার ঠিক নেই, সাথে সাথে যারা এক কথা বলেছেন তাদের বক্তব্যটিও পরস্পর বিরোধী এমন বর্ণনা পরিত্যাজ্য। (ইলাউস সুনান-৭/৪৮)
২. এই বর্ণনাটি হযরত ওমর রাঃ থেকে আরেকটি সহীহ ও শক্তিশালী বর্ণনার বিপরিত। হযরত ওমর রাঃ থেকে ২০ রাকাত তারাবীহের কথা ইমাম মালিক রাহঃ তার মুয়াত্তার ৪০ নং পৃষ্ঠায় ও হাফেজ ইবনে হাজার ফাতহুল বারীর ৪ নং খন্ডের ২১৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেন। সুতরাং বুঝা গেল এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য নয়।
৩. ইমাম মালিক রাহঃ নিজেই এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য মনে করেননি, তাই তিনি নিজে ৮ রাকাতের কথা বলেননা।
৪. যদি হযরত ওমর রাঃ থেকে ১১ রাকাতের বর্ণনাটি সহীহ হত তাহলে পরবর্তীতে হযরত উসমান রাঃ ও আলী রাঃ থেকে এরকম বর্ণনা ও আমল প্রমাণিত হত, অথচ তাদের থেকে এরকম বর্ণনা প্রমাণিত নয়।
৫. এটাও হতে পারে যে, প্রথমে হযরত ওমর রাঃ এর কাছে নবীজী থেকে ৮ রাকাতের বর্ণনা এসেছিল কিন্তু পরবর্তীতে ২০ রাকাতের বর্ণনাটি পৌঁছলে তিনি ৮ রাকাতের বর্ণনাটি পরিত্যাগ করেন।
এই সকল কারণে এই হাদিসটি আমলযোগ্য হিসেবে বাকি থাকেনা।
আহলে হাদিস ইমামদের বক্তব্য তারাবীহের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে
১. শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন-আর যারা ধারণা করে যে, নিশ্চয় রামযানের দন্ডায়মানতার নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রমাণিত আছে নবীজী সাঃ থেকে যার উপর বাড়ানো কমানো যাবেনা সে ভুলের মাঝে আছে।(ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/৪০১)
২. আল্লামা ইবনে সুবকী রহঃ বলেন-জেনে রাখ! নিশ্চয় রাসূল সাঃ কি বিশ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন না তার চে’ কম পড়েছেন তা তার থেকে বর্ণিত নেই (শরহুল মিনহাজ)
৩. আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ বলেন-নিশ্চয় ওলামায়ে কিরাম মতান্যৈক্য করেছেন এর সংখ্যার ক্ষেত্রে, যদি তা নবীজী সাঃ থেকে প্রমাণিত বিষয় হত তাহলে তাতে মতবিরোধ হতনা।(আল মিসবাহ-৭৪)
৪. মাওলানা ওয়াহীদুজ্জামান বলেন-তারাবীহ নামাযের নির্দিষ্ট রাকাত নেই।( নাজলুল আবরার-১/১২৬)
৫. আবুল খায়ের নুরুল হাসান খাঁ বলেন-মোটকথা হল নির্দিষ্ট সংখ্যা নবী থেকে প্রমাণিত নয়।( আল উরফুল জাদি-৮৪)
৬. নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বলেন-নিশ্চয় তারাবীহ নামায সুন্নত মৌলিকভাবে। যেহেতো নবীজী সাঃ তা রাতে পড়তেন তার পর তা ছেড়ে দিয়েছেন উম্মতের প্রতি দরদে যেন তা ফরয না হয়ে যায়, আর এর কোন নির্দিষ্ট রাকাতের কথা সহীহ হাদিসে নেই, কিন্তু নবীজী সাঃ এর একথা জানা যায় যে, তিনি রামাযানে এত ইবাদত করতেন যা অন্য সময়ে করতেননা।(আল ইনতিকাদুর রাজী’-৬১)
ঠান্ডা মাথায় উল্লেখিত আলোচনা পড়লে আশা করি সবার কাছে স্পষ্ট হবে ৮ রাকাত তারাবীহের দাবিটি একটি ভুল দাবি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের রামাযানের এই পবিত্র আমল তারাবীহ ২০ রাকাত আদায় করে তার নৈকট্য হাসিল করা তৌফিক দান করুন


Saturday, May 21, 2016

অভয়

৪। যাকে নাকি ভালবাসা যায়, বিশ্বাস করা যায়, তাকে নাকি ভয় পাওয়া যায় না। -রোমেনা আফাজ বই দস্যু বনহুর, ২ খ / ৪১১ পৃষ্ঠা আরো 


চিন্তা



এক বুযুর্গ কোনো এক দোকানে কিছু পন্য কিনতে গেলেন। পণ্য খরীদ করার পর যখন তিনি দোকানি কে টাকা দিলেন তখন দোকানি টাকাটা হাতে নিয়ে পরখ করতে লাগলো। কিছু সময় পর বললো বাবা!!! এটা জাল নোট। এটা অচল। দোকানির বক্তব্য শুনে বুযুর্গ হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন। দোকানদার বললো, আপনি কাঁদবেন না। আমি আপনাকে বিনে পয়সায় পণ্য দেবো। - না নাহ!! আমার পণ্যের প্রয়োজন নেই। তিনি কেঁদেই চললেন। আশে-পাশে লোকজন জড়ো হয়ে গেলো।ভীড় ঠেলে একজন সামনে এসে বললো, বাবাজী!!! এতো কাঁদবেন না। সে যদি আপনাকে পণ্য নাও দেয় তাহলে আমি নিজের টাকা দিয়ে আপনাকে পণ্য কিনে দেবো। আপনি কান্না বন্ধ করে পণ্য নিয়ে যান। উত্তরে তিনি বললেন, বাবা!! পণ্য নিতে না পেরে আমি কাঁদছি না। আমিতো এই জন্য কাঁদছি যে, আমি ভেবেছিলাম, আমার কাছে কিছু টাকা আছে । আমি সেগুলোকে খাঁটি মনে করেছিলাম। কিন্তু আমি যখন সেই টাকা দোকানদারের কাছে আনলাম, দোকানদার তা পরীক্ষা করে বললো, এটা জাল টাকা। তখন আমার ভাবনা এলো, হায় হায়!!! আমি তো পৃথিবীতে যে আমল করছি তাকে খাঁটি মনে করছি। আত্মতৃপ্তিবোধ করছি আমার ভাণ্ডারেও বেশ আমল আছে। হাশরের মাঠে যদি আল্লাহ আমাকে বলেন, ও বান্দা!! তুমি যতো আমল সাথে এনেছো তার সব ভেজাল!! সব ভেজাল!! তাহলে আমার কী হবে? পৃথিবীতে তো আমি অন্য টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে পারবো। কিন্তু আখেরাতে তো অন্য আমল নেয়ারও সুযোগ পাবো না। একথা ভেবেই আমার কান্না চলে এলো। লোকেরাও তার কথা শুনে কাঁদতে লাগলো। বন্ধুরা!!! মাঝে-মাঝে মনে ভাবনা জাগে। এইযে টুটা- ফাটা আমল আমরা দৈনন্দিন করছি সেগুলো সব গৃহীত হবে তো প্রভুর দরবারে? আমাদের নামায? রোজা? তা‘লিম? সব? নাকি আকাশে ওঠার আগেই আমাদের নাকে-মুখে নিক্ষেপ করা হচ্ছে দলা পাকিয়ে? নিষ্কৃতি পাবো তো তাঁর দরবারে? কাল হাসরে? ভাবলে খুব ভয় হয়। আমাদের আমলগুলো সুন্নাতে নববীর সাথে মিলছে তো? আমাদের লেবাস-পোষাক মদীনা ওয়ালার মতো হচ্ছে তো? কখনো ভাবনা জাগে। আবার ভুলে যাই। ইশ!!! কেমন হবে সেদিন? যদি আমার আমলগুলোও ভেজাল প্রমাণিত হয়? হে প্রভু!! আমাদেরকে নির্ভেজাল আমল করার তৌফিক দান করো। আমীন।


বন্ধু


আমার বাড়ি ঘোষগ্রাম,


ছাগল



বানর





শিয়াল



সিংহ





Thursday, May 19, 2016

বন্ধু


নামাজ পড়তে যাবি না মানে,,
তুই আমার প্রানের বন্ধু।
তোকে ছাড়া কিভাবে থাকব জান্নাতে!!! 


Wednesday, May 18, 2016

Madina



শৈশবে

একদিন এক বৃদ্ধ পিতা তার ৩০ বছর বয়স্ক সন্তান কে নিয়ে বারান্দায় বসে আছে এসময় একটা চড়ুই এসে বসলো ওখানে। বাবা সন্তান কে বললেন- ওটা কি?
সন্তান বলল- ওটা চড়ুই
...
বাবা ২ মিনিট পর পুনরায় জিজ্ঞেস
করলেন ওটা কি?
সন্তান বিরক্তের সাথে জবাব দিল
ওটা হল চড়ুই বললাম তো
১০ মিনিট পর বাবা আবার এক ই প্রশ্ন করলেন এবার সন্তান রেগে ধমক দিল তার বাবা কে !
তোমার সমস্যা কি ? এক কথা কয়বার বল !!!
বাবা আস্তে করে উঠে গেলেন ওখান
থেকে,ঘর থেকে নিয়ে আসলেন তার
নিজের একটা ডাইরি
যেখানে তিনি তার সব ভালো
লাগা-মন্দ লাগা লিখে রাখেন
পাতা উল্টাতে থাকেন নিজে-
একটা পাতায় থমকে দারালেন বাবা

কি লেখা ওতে?
"সন ১৯৮৬, ২১ নভেম্বর
আমার ছোট্ট ছেলেটা আজ বারান্দায় আমার সাথে বসে অনেক ক্ষণ দুষ্টামি করল, একটা কাক কে দেখে সে আজ ২৩ বার আমায় প্রশ্ন করে চলেছে ওটা কি, ওটা কি, আমি ২৩ বার জবাব দিলাম, এরপর ও
ক্ষান্ত হল,চুপ হল-অকে বুকে জড়িয়ে
ধরলাম smile emoticon"
পড়তে পড়তে ভদ্রলোক এর চোখ দিয়ে অশ্রু গরিয়ে পরল
** যেই লোক তার শিশু সন্তান এর
২৩ বার এর প্রশ্নেও বিরক্ত না হয়ে বরঞ্চ আদরে জড়িয়ে ধরেছেন, তারই বৃদ্ধ বয়সের ৩ বার এর জবাবে খেতে হয় ধমক !!!
,
শৈশবে যে হাত এর সহায়তায় বেড়ে
উঠেছেন, বাহু বল শক্ত হল বলে
বার্ধক্যে তাকে একা করে ফেলে
দেবেন না দয়া করে।।



পর্দা



দেহের সাথে আত্নার যেমন সম্পর্ক। একজন সৎ মায়ের আদর্শ নারীর সাথে পর্দার তেমন সম্পর্ক।
প্রান ছাড়া যেমন দেহকে বাঁচানো সম্ভব না। ঠিক তদ্রূপ পর্দা ছাড়া নারীর ইজ্জত রাক্ষা করাও সম্ভব না।
"
দেহের সাথে মাথার যেমন সম্পর্ক
নারীর সতিত্বের সাথে পর্দার তেমন সম্পর্ক।
কেউ যদি বলে আমার দেহ থেকে মাথাকে বিচ্ছন্ন করলেও আমি চিবিত থাকতে পারি, এ কথাটি বিশ্বাস করা যেমন বোকামী।
ঠিক তদ্রূোপ কোন নারী যদি বলে আমি পর্দা না করলেও আমার চরিত্র বা সতিত্ব অক্ষুণ্ণ আছে এ কথাটি বিশ্বাস করা তার থেকে আরো বেশি বোকামী।
কারন পর্দা আর সতিত্ব অবিচ্ছিন্ন একটি অংশ।
Yes Or no???


দাওয়াত



দাওয়াত ও তাবলীগ সমন্ধে একটি প্রশ্ন: 
মা, বোন, বিবি, বাচ্চা রেখে তাবলীগের চিল্লা, তিন দিন, এক সাল, গাস্ত ইত্যাদি কি বেদআত? রাসুল (স:) কি এভাবে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন? 

প্রশ্নের উত্তর :
এ প্রশ্নটি একটি বোকামীসূলভ প্রশ্ন। দ্বীন প্রচারের পদ্ধতি ও মূলনীতি সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয়বাহী এসব প্রশ্নাবলী।
.
তাবলীগের চিল্লা, তিন দিন, এক সাল। গাস্ত ইত্যাদীর সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি যদি বেদআত হয়। তাহলে মাদরাসার একাডেমিক পদ্ধতি কেন বেদআত নয়? ক্লাসিক্যাল পদ্ধতিতে কেন মাদরাসাগুলোতে একের পর এক কিতাব পড়ানো হয়? এ পদ্ধতিতে কি রাসূল সাঃ দ্বীন শিখিয়েছেন? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, আরবী বিশ্ববিদ্যাল, জামিয়াগুলোর পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর সনদ প্রদানও একটি বিদআত সাব্যস্ত হবে। কারণ এমন পদ্ধতিতে রাসূল সাঃ কুরআন হাদীস শিক্ষা দেন নি। এগুলোকে বেদআত বলাটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে? না চূড়ান্ত পর্যায়ের আহমকীর নিদর্শন হবে এরকম প্রশ্ন করা?
.
তাবলীগ জামাআত কোন নতুন দল বা সংগঠনের নাম নয়, বরং নবী করীম (সঃ) এর তিরোধানের পূর্ব থেকেই বিদায় হজ্বের পর থেকে ব্যাপক হারে সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) এবং রাসূল (সঃ) এর মৃত্যুর পর থেকে নিয়ে প্রত্যেক যুগেই কমবেশি সম্মিলিত ও বিচ্ছিন্নভাবে দাওয়াতের এ দায়িত্ব পালিত হয়ে আসছিল।
.
হযরত ইলিয়াস (রহঃ) ব্যাপক আকারে ও সংগঠিতরূপে সেটির পুনঃজাগরণের চেষ্টা করেছেন মাত্র। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই যেমন কর্মধারা ও সূচি থাকে, তিনিও তেমনি এ জামাতের জন্য কিছু কর্মধারা তৈরী করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিকভাবে অধিক উপকারী ও জরুরী বিষয় চিন্তা করে। পূর্ণ শরীয়তকে সামনে রেখে এর মাঝে কোন বিষয়গুলো প্রথমে আমলে আনতে পারলে পূর্ণ শরীয়তের উপর পাবন্দ হওয়া সহজ হয়ে যাবে তা চিন্তা করে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন। এরই অন্তর্ভূক্ত ৬ গুণ, ৩ দিন, এক চিল্লা, তিন চিল্লা, গাস্ত, ইত্যাদি। যা কোনভাবেই শরীয়তের গন্ডির বাহির থেকে নয়। সেই সাথে শরয়ী কোন হুকুমকে অস্বিকার করে নয়।
.
যেমন বর্তমান মাদরাসা শিক্ষা শরীয়তের মাঝে নতুন কোন সংযোজন নয়, বরং সাহাবায়ে কিরামের মাঝে আসহাবে সুফফার যে জামাআত সার্বক্ষণিক দ্বীন চর্চায় নিমগ্ন থাকতেন সেটাই ছিল সর্ব প্রথম মাদরাসা। যদিও বর্তমান মাদরাসা পদ্ধতি আর আসহাবে সুফফার মাদরাসার মাঝে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। মৌলিকত্বে কোন পার্থক্য নেই। সে সময় কোন সিলেবাস ছিল না। ছিল না কোন ক্লাসিক্যাল অবকাঠামো। ছিল না সার্টিফিকেট দেওয়ার পদ্ধতি। ছিল না বিধিবদ্ধ শিক্ষক ষ্টাফের কোন মূলনীতি। কিন্তু পরবর্তীতে আম ফায়দার জন্য এবং দ্বীন চর্চায় অধিক উপকার অর্জনের নিমিত্তে একটি একাডেমিক পদ্ধতি আবিস্কার করা হয়েছে। যে আবিস্কার কোন বিদআত নয় মর্মে সকল ওলামায়ে কিরাম একমত। তেমনি তাবলীগ জামাআতের বর্তমান সাংগঠনিক ভিত্তি হিসেবে কিছু মূলনীতি নির্ধারণও কোন নতুন বিষয় নয়, বা বিদআত নয়। কারণ মাদরাসা শিক্ষার বর্তমান পদ্ধতিকে যেমন আমরা সওয়াবের কাজ মনে করি না, কিন্তু ইলমী দ্বীন চর্চাকে জানি সওয়াবের কাজ। তেমনি তাবলীগ জামাআতের পদ্ধতিটা মূলত সওয়াবের কারণ নয়, বরং এর দ্বারা যে কাজটি আঞ্জাম দেয়া হয় তথা তাবলীগ সেটি হল সওয়াবের কাজ। এ দু’টিতে কোন পার্থক্য নেই। 
সুতরাং তাবলীগ জামাআতকে দ্বীন এর মাঝে নতুন সংযোজন বলে বিদআত সাব্যস্ত করাটা বিদআতের সংজ্ঞা ও দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত পর্যায়ের অজ্ঞতার পরিচায়ক।
.
বেদাত কি? 
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমাদের দ্বীনের মাঝে যে ব্যক্তি নতুন বিষয় আবিস্কার করে যা তাতে নেই তাহলে তা পরিত্যাজ্য।
.
{সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৬০৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-২৫৫০, সহীহ মুসলিম-৪৫৮৯}
.........
এই হাদিসে লক্ষ্য করুন কি কি শর্তে নব আবিস্কৃত বস্তুকে পরিত্যাজ্য বলেছেন নবীজী সাঃ।
১- সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। যার কোন সামান্যতম প্রমাণ নবীযুগে বা সাহাবা যুগে নাই এমন বিষয় হতে হবে।
২- দ্বীনী বিষয় হতে হবে। সুতরাং দ্বীনী বিষয় ছাড়া যত নতুন বিষয়ই আবিস্কারই হোকনা কেন তা বিদআত নয়। যেমন বৈজ্ঞানিক আবিস্কার। নতুন নতুন আসবাব ইত্যাদি। এসব বিদআত নয়। কারণ এসব দ্বীনী বিষয় নয়। বরং বৈষয়িক বিষয়।
৩- দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার হতে হবে। দ্বীনের জন্য হলে সমস্যা নাই। কারণ দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার মানে হল এটা সওয়াবের কাজ। সুন্নাত, ওয়াজিব ইত্যাদি। আর দ্বীনের জন্য হলে সেটা মূলত সওয়াবের কাজ নয়, বরং সওয়াবের কাজের সহায়ক। যেমন মাদরাসা শিক্ষা একাডেমিক পদ্ধতি নববী যুগে ছিলনা। পরবর্তীতে আবিস্কার করা হয়েছে। এই একাডেমিক পদ্ধতিটি দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার নয়, বরং দ্বীনী কাজের জন্য সহায়ক হিসেবে আবিস্কার হয়েছে। অর্থাৎ দ্বীন শিখার সহায়ক। আর দ্বীন শিখাটা সওয়াবের কাজ। কিন্তু সিষ্টেমটা মূলত সওয়াবের কাজ নয় বরং সহায়ক। তেমনি তাবলীগের বর্তমান পদ্ধতিটি ইলিয়াস রহঃ আবিস্কার করেছেন দ্বীন প্রচারের সহায়ক হিসেবে। তথা দ্বীনের জন্য আবিস্কার। দ্বীন মাঝে আবিস্কার নয়। তাই এটি বিদআত হওয়ার কোন সুযোগই নেই।
যারা বলেন এ পদ্ধতি বিদআত, তারা মূলত দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত অজ্ঞতার পরিচয় দেন এসব কথা বলে।
.
তাবলীগ জামাআতের কাজ যেহেতু রাসূল (সাঃ) ও পরবর্তী সাহাবায়ে কিরামের প্রচার করা দ্বীন প্রচারেরই একটি সুসংহত রূপ মাত্র। তাই তাবলীগ জামাআতের কাজের সাথে সেসব ফযীলত শামিল হবে যা কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত দ্বীন প্রচারের ফযীলত। যেমন দ্বীন শিক্ষার ফযীলত প্রাপ্ত হবে বর্তমান একাডেমিক পদ্ধতিতে পড়াশোনা করা মাদরাসা ছাত্ররা।
আল্লাহতালা আমাদের সবাইকে সহি দ্বীন বুঝার ও শেখার তৌফিক দান করুন। আমীন!


সুন্দর






Tuesday, May 17, 2016

ক্বাবা শরীফ

http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/e/e2/Kabaa.jpg
কাবাকাবাঘরকাবা শরীফ (আরবিالكعبة al-Ka‘bahআ-ধ্ব-ব['kɑʕbɑ]) , আরও যে নামে পরিচিত al-Kaʿbatu l-Mušarrafah (الكعبة المشرًّفة), al-Baytu l-ʿAtīq (البيت العتيق "The Primordial House"), অথবা al-Baytu l-Ḥarām (البيت الحرام "The Sacred House"), একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত, যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। আসলে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।
ইসলাম ধর্ম মতে কাবা কে সবচেয়ে পবিত্র স্থান হিসেবে মনে করা হয়।[১] এটি মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ পরেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিন করেন।[১]

অবস্থান এবং বাস্তবিক কাঠামো[সম্পাদনা]

কাবা একটি বড় পাথরের কাজ করা কাঠামো যার আকৃতি প্রায় একটি ঘনক এর মত। কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকা'আব অর্থ ঘন থেকে। এটি কাছের পাহাড়ের গ্রানাইট দ্বারা তৈরি যা দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ২৫সেঃমিঃ (১০ ইঞ্চি) মার্বেল পাথরের ভিত্তির উপর যা বাইরের দিকে ৩০সেঃমিঃ (১ ফুট) বাড়িয়ে আছে।[১] কাঠামোতে জায়গার পরিমাণ প্রায় ১৩.১০ মিঃ (৪৩ ফুট) উচ্চতা, পাশাপাশি ১১.০৩ মিঃ X ১২.৬২ মিঃ[২][৩]চারটি কোন কম্পাসের প্রায় চার বিন্দু বরাবর মুখ করা।[১] কাবার পূর্ব কোনা হচ্ছে রুকন-আল- আসওয়াদ" (কাল পাথর অথবা "আল-হাজারুল-আসওয়াদ"), একটি উল্কাপিন্ডের অবশেষ; উত্তর কোনা হল "রুকন-আল-ইরাকী" (ইরাকী কোণ); পশ্চিমে রয়েছে "রুকন-আল-সামী" (পূর্ব-ভূমধ্য সাগরীয় কোণ) এবং দক্ষিণে "রুকন-আল-ইয়ামানী" ('ইয়েমেনী কোণ')।[১][৩]

কাবা শরীফের গিলাফ[সম্পাদনা]

মূল নিবন্ধ: কাবা শরীফের গিলাফ
কাবা কালো সিল্কের উপরে স্বর্ণ-খচিত ক্যালিগ্রাফি করা কাপড়ের গিলাফে আবৃত থাকে। কাপড়টি কিসওয়াহ নামে পরিচিত ; যা প্রতিবছর পরিবর্তন করা হয়।[৪][৫] কালেমা শাহাদাত এ কাপড়ের মধ্যে সুতা দিয়ে লিখার কাঠামো তৈরি করা হয়। এর দুই তৃতীয়াংশ কোরানের বাণী স্বর্ণ দিয়ে এম্রোয়ডারি করা হয়।