
দেওবন্দের বিরোধিতা করেন?
এর আগে জেনে নিন দেওবন্দী কারা।
কী তাদের অবদান? কারা মুসলিমদের মৌলিক স্বাধিনতা দিয়েছে! কাদের তাজা রক্ত ও লাশ প্রতিটি
গাছে ঝুলানো হয়েছে? (ওপেন দ্যা রেসালাহ্!)
১৮০৩ ইমাম শাহ আব্দুল আজিজ ঐতিহাসিক ফতোয়া দারুলহরব মুক্তি যোদ্দ্বের সুচনা
১৮৫৭ সালে আযাদী লড়াই হল । শামেলীর ময়দানে মুসলিম বনাম ইংরেজের লড়াই হল । সে যুদ্ধে মুসলিমদের পক্ষে আমীর ছিলেন হাজি শাহ ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রাহ. এবং সেনাপতি ছিলেন মাওলানা কাসিম নানুতবি রাহ. । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সে যুদ্ধে মুসলমানদের বিপর্যয় ঘটে ।হাজি ইমদাদুল্লাহ রাহ. মক্কায় হিজরত করেন , মাওলানা কাসিম নানুতবি রাহ. তিনদিন আত্মগোপন করেন । ইংরেজরা হাজার হাজার মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয় । অসংখ্য কুরআন শরীফ জ্বালিয়ে দেয় । ৫১ হাজার আলেমকে ফাসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয় ।
যদিও আপাত দৃষ্টিতে উপনেবেশিক শক্তি এই আন্দোলন দমন করতে সক্ষম হয়েছিল কিন্তু এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা এতটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, মুসলিম জাতি কোন অবস্থাতেই গোলামীর জিন্দেগী বরণ করে নিতে সম্মত হবে না।
তাই তারা কর্ম কৌশল পরিবর্তন করল। যে সাদা চামড়ার নরপিশাচ ভারতবর্ষের মাটিতে লক্ষ মুসলমানের বুকের তাজা রক্তে খুনের দরিয়া রচনা করেছে, তারাই আবার সর্বসাধারনের কল্যাণকামীর মুখোশ পরে তাদের সামনে হাজির হল। উদ্দেশ্য ছিল, ভয়-ভীতি দেখিয়ে কিংবা গায়ের জোরে যে কওমকে দমন করা যায় না, ধীরে ধীরে তাদের চিন্তা-চেতনা ও মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন আনা। যেন তারা ধর্মীয় অনুশাসন, স্বকীয় সভ্যতা ও দীপ্তিমান অতীতকে ভুলে গিয়ে অদূর ভবিষ্যতে নিজেকে সতন্ত্র জাতি হিসেবে মূল্যায়ন করতে না পারে। এই হীন উদ্দেশ্য সফল করার সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করা। এবং এর মাধ্যমে তাদের দিল-দেমাগে পাশ্চাতের চতুর্মূখী কুফরী প্রভাব বদ্ধমূলকরা। যেন এতে প্রভাবিত হয়ে তারা নিজ বিবেক দিয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ‘লর্ড ম্যাকল‘ এদেশের মানুষেরজন্য এক নতুন শিক্ষানীতির সুপারিশ করে। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করেন। তাতে ভারতবর্ষের জাতীয় শিক্ষানীতি তথা মাদ্রাসাশিক্ষা ব্যবস্থাকে ন্যাক্কারজনক ভাবে উপহাস করা হয়। এবং ওলামায়ে কেরামের উপর ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা হয় পরিশেষে সে স্পষ্ঠ ভাষায় লিখে যে, ” এখন আমাদের কর্তব্য হল , এমন একদল মানুষ তৈরি করা যারা আমাদের অধিকৃত অঞ্চলের অধিবাসী ও আমাদের মাঝে দোভাষীর দায়িত্ব পালন করবে। যারা রক্ত ও বর্ণে ভারতবর্ষের হলেও চিন্তা- চেতনা , মেধা - মনন ও চারিত্রিক দৃষ্টিকোন থেকে হবে ইংরেজ ”।
দূরদর্শী ওলামায়ে কেরাম এই সুদূর প্রসারী চক্রান্ত ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে বেখবর ছিলেন না। তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন, এমন পরিস্থিতিতে মুসলমানদের দ্বীন-ঈমান রক্ষার্থে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে তারা সতন্ত্রজাতি হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবেননা। কয়েক খান্দান পরে হয়তো ইসলাম ও তার মৌলিক বৈশিষ্ট্যাবলীসম্পর্কে সচেতন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই তাঁরাও সম্মুখ সমরে লড়াইয়ের পাশাপাশি নব উদ্ভুত শিক্ষানীতির ধ্বংসের হাত থেকে মুসলিম জাতিকে রক্ষার পথ বের করলেন। আর ‘দারুল উলূম দেওবন্দ‘ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁরা সে দিকেই অগ্রসর হয়েছিলেন।
হযরত মাওলানা কাসেম নানুতবী (রঃ), রশিদ আহম্মদ গাঙ্গুহী (রঃ), হাজী আবেদ হুসাইন (রঃ) ১৮৫৭সালের জিহাদে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। এমনকি তারা উত্তর প্রদেশের একটি ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। ( সুবহানাল্লাহ ) এ কারনে অবশ্য দীর্ঘদিন যাবৎ তাঁদেরকে ইংরেজ প্রশাসনের কোপানলের শিকার হয়ে থাকতে হয়েছিল।
সশস্ত্র সংগ্রাম আপাত ব্যর্থ হলে তাঁরা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য পর্যাপ্ত মানুষ প্রস্তুতির জন্য একটি নীরব ও সফল আন্দোলনের বীজ দেওবন্দের মাটিতে বপন করেন। যা ধীরে ধীরে গোটা ভারতবর্ষে আপন শাখা-প্রশাখা, পত্র-পল্লব বিস্তার করে এক মহীরুহের রূপ ধারন করে।
তদানীন্তন ভারতবর্ষে কোন দ্বীনি মারকায প্রতিষ্ঠা করা ছিল নিজেকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেবার নামান্তর। সুলতান মুহাম্মদ তুঘলকের শাসনামলে শুধুমাত্র দিল্লিতেই সহস্রাধিক মাদরাসা ছিল। কিন্তু ফিরিঙ্গি আগ্রাসনের পর পুরো ভারতবর্ষের কোথাও একটি মাদরাসা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। ওলামায়ে কেরামকে আযাদী আন্দোলনে অংশ গ্রহণের অপরাধে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হতো কিংবা আন্দামান দ্বীপে নির্বাসন দেয়া হতো। আর যারা মুক্ত ছিলেন, সংঘবদ্ধ হওয়া তাদের জন্য ছিল দুষ্কর। তাই আকাবিরগণ প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রামকেই বেছে নিয়ে প্রভুত কল্যাণের এই ধারা রচনা করেন।
অবশেষে মাওলানা কাসিম নানুতবি রাহ. এর নেতৃত্বে ও মুসলিম জনতার সহয়তায়, ১৫ মুহাররম ১২৮৩ হিজরী মোতাবেক ৩০ মে ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দে নিতান্ত অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে এই নীরব আন্দোলনদারুল উলুম দেওবন্দ’ নামেপ্রতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৮টি মুলনীতির উপর।
*****দারুল উলূম দেওবন্দের ৮টি মূলনীতিঃ-********
১। অত্যাচারি শাসকের সাহায্য ব্যতীত শুধু জনসাধারণের সাহায্যে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে। এভাবে জনসাধারণের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং স্বাধীনতাকামী মুজাহিদগণের পক্ষে জনমত গঠন।
২। ব্যাপকহারে ছাত্র ভর্তি করে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে আধিপত্যবাদী ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনার জন্য সুশিক্ষিত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী গঠন।
৩। শুরাতাত্ত্বিক অর্থাৎ পরামর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে।
৪। যে কোনো সংগ্রামকে সফলতায় নিয়ে যেতে হলে সমমনাদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, তাই এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং কর্মচারীবৃন্দ সমমনা হতে হবে।
৫। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করে সঠিক দায়িত্ব পালনের উপযোগী হতে হবে।
৬। চাঁদা সংগ্রহের মাধ্যমে গরিবদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে এবং পুঁজিবাদী, ধনী এবং জমিদারদের সাথে সম্পর্ক বিছিন্ন করতে হবে।
৭। অত্যাচারি শাসকের কোনো সাহায্য গ্রহণ করা যাবে না।
৮। মুখলিস/নির্মোহ লোকদের চাঁদাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
‘এখলাসের সাথে দ্বীনের খেদমতই যেহেতু একমাত্র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল তাই কোন প্রচার মাধ্যমের আশ্রয় না নিয়ে দেওবন্দের ছোট্র পল্লিতে, ছাত্তা মসজিদের আঙ্গিনায়, একটি ডালিম গাছের ছায়ায়, আবেহায়াতের এই নহর তারা রচনা করেন। দুই বুযুর্গের মাধ্যমে কার্যত প্রতিষ্ঠানটির পদযাত্রা শুরু হয়।
প্রথমজন শিক্ষক;
হযরত মাওলানা মোল্লা মাহমুদ।
দ্বিতীয়জন ছাত্র;
দেওবন্দের নওজোয়ান মাহমুদ হাসান; পরবর্তীতে যিনি শায়খুল হিন্দ নামে খ্যাত হোন ।
তিনি বড় হবার পর জমিয়তুল আনসার নামে একটি সংস্থা গঠন করেন । এই সংস্থার অন্যতম সদস্য মাওলানা উবাইদুল্লাহ সিন্ধীকে কাবুল পাঠানো হয় । তিনি আফগান গিয়ে জুনদুল্লাহ নামে একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠন করেন। ইস্তাম্বুল গিয়ে উসমানি খলিফা আব্দুল হামিদের কাছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সামরিক সাহায্য চান আফগান অধিপতি আমীর আমানুল্লাহ খানের সাথে চুক্তি হয় যে উসমানি সৈন্যরা আফগান হয়ে হিন্দুস্থানে প্রবেশ করবে। তিনি এসব বর্ণনা একটি রেশমী রুমালে লিখে হিন্দুস্থানে স্বীয় শায়খ শায়খুল হিন্দের কাছে পাঠান। কিন্তু এটা ইংরেজ গুপ্তচরের হস্তগত হয় । ইতিহাসে এটা রেশমী রুমাল আন্দোলন নামে খ্যাত।
তখন শায়খুল হিন্দ হজ্বের উদ্দেশে হেজাযে রওয়ানা হন। সেখানে তিনি হেজাযের উসমানি গভর্ণর গালিব পাশার সাথে হিন্দুস্থানের আযাদীর বিষয় নিয়ে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এবং উসমানি সালার আনোয়ার পাশা ও জামাল পাশার সাথে কুটনৈতিক সাক্ষাত করেন। কিন্তু তখন মক্কার গাদ্দার গভর্ণর শরীফ হোসাইন শায়খুল হিন্দকে ইংরেজদের হাতে তুলে দেয়। ইংরেজরা তাকে মাল্টার কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। তখন স্বীয় শায়খের খাদেম হিসেবে স্বেচ্ছায় কারাবন্দী হোন শায়খুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানি রাহ. ।
দীর্ঘদিন কারা নির্যাতনের পর ১৯১৯ সালে শায়খুল হিন্দকে মুক্তি দেয় ইংরেজরা । উনার ইন্তেকালের পর যারা তাকে গোসল দিয়েছেন তারা দেখতে পান যে তার কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত কোনো গোশত নেই । ইংরেজদের নির্যাতনের ফলে তার অবস্থা হয়েছিল ।
শায়খুল হিন্দের ইন্তেকালের পর আযাদী আন্দোলনে আসেন কুতবে আলম হোসাইন আহমদ মাদানি রাহ.। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের জন্যে তাকে কয়েকবার কারাগারে যেতে হয় । যখন ১৯৪৭ সালে বৃটিশ বিতাড়নের সময় অখন্ড ভারত আর দ্বি-খন্ড ভারত নিয়ে উলামায়ে দেওবন্দের মাঝে ইজতেহাদি ইখতেলাফ দেখা দেয়। তখন শায়খুল ইসলাম শিব্বির আহমদ উসমানি, মাওলানা যফর আহমদ উসমানি পাকিস্তানে শরীয়াহ শাসন কায়েমের জন্য দাঁড়ান । মাদানী (রহঃ) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন দিকনির্দেশনা দিতে থাকেন।
হযরত মাদানীর পাক-বাংলাতে অনেক শিষ্য ছিলেন , বাংলাতে যার মধ্যে অন্যতম শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী দা. বা. ,তিনি হযরত মাদানির ছাত্র এবং খলীফা , বর্তমানে যিনি আরেকটি ইসলামী সংগ্রামের পথিকৃৎ।
লর্ড ম্যাকল কর্তৃক ইসলামকে মিটিয়ে দেওয়ার হীন ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতঃ দ্বীনকে অক্ষুন্ন রাখা ছিল দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার অন্যতম মৌলিক উদ্দেশ্য। এরই সাথে ওলামায়েকেরামের এক জানবাজ জামাত তৈরি করাও ছিল সময়ের দাবী, যারা যে কোন পরিস্থিতিতে দ্বীনকে আগলে রাখবেন, সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিবেন এবং এই উম্মাহকে জিহাদে নেতৃত্ব দিবেন।যদি বলা হয় ‘দারুল উলূম‘ নিজস্ব পরিমণ্ডলে সফল, তাহলে অতুক্তি হবে না।
প্রতিষ্ঠার সূচনা লগ্ন থেকে তালীম তরবিয়ত, তাযকীয়া-তাসাউফ, দাওয়াত-সিয়াসত, জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহসহ প্রতিটি অঙ্গনের জন্য সে জন্ম দিয়ে আসছে যুগের খ্যাতনামা মনীষীবর্গ ও মুজাহিদ্গণকে। যারা দ্বীনকে আগলে রেখেছেন অক্ষুন্ন আদলে। তারা অমিয় বাণী পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছেন উম্মাহর প্রতিটি ব্যক্তির কানে। আহারে-অনাহারে, দুঃখে-সাচ্ছন্দ্যে যে কোন প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে, আপন স্বার্থকে পেছনে ফেলে উম্মতের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ টিকিয়ে রাখতে তারা নিবেদিত প্রাণ। বাতিলের শত ঝড়-ঝাপটার মুখে হিমালয়ের মত অবিচল, তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা সমুদ্র তরঙ্গের ন্যয় উত্তাল, নববী আদর্শের মূর্ত প্রতীক।
আর একথাতো সবার জানা যে, একবিংশ শতাব্দীর জিহাদের মূল সূতিকাগার হলোঃ খোরাসান । এই যুগে জিহাদের যতগুলি মাআরেকা রয়েছে তার সবগুলিই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে খোরাসানের উপর নির্ভরশীল। এমনকি শহীদ আব্দুল্লাহ আজ্জাম রঃ সহ আরব মুজাহিদীনরা খোরাসানের হানাফী-দেওবন্দী মুসলমানদের কাছে পেয়েছিলেন জিহাদের জন্য নুসরাত ও সহযোগিতা।
এজন্যই বোধ করি দরবারী আলেমদের জিহবা দেওবন্দ মাদ্রাসা ও আহনাফদের বিরুদ্ধে এতো ধারালো। কারণ এই আহনাফ ও দেওবন্দ ফারেগ আলেমরাই সেখানে জিহাদের ঝান্ডা বুলন্দ রেখেছেন। আর এখানে এসে সবাই তাওহীদ আল আমালি এর শিক্ষা পেয়ে শুধুমাত্র এসি রুমের ভিতরে বসে তাওহীদের বড় বড় কিতাবের আলোচনার অসারতা বুঝতে পেরেছে। পাকিস্থান, ইরাক, শিশান, ইয়েমেন, মালিসহ সাম্প্রতিক আল-শামে জিহাদের ময়দানে সর্বত্রই আফগান ফেরত মুজাহিদীনদের এক বিরাট অবদান রয়েছে। ইরাকের শাইখ আবু মুসাব আল যারকাওয়ী রাহ. খোরাসানে জিহাদের প্রশিক্ষণ লাভ করেন। চেচনিয়ার শাইখ খাত্তাব রাহ. খোরাসানে জিহাদের প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এভাবেই ইয়েমেন, মালি ইত্যাদি জিহাদের ময়দানগুলোতে খোরাসানের রয়েছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা। সর্বোপরি তানজীম আল কায়িদা পুরোটাই প্রাথমিকভাবে খোরাসানের জিহাদে অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা গঠিত হয়।
আর খোরাসানের স্থানীয় বেশীরভাগ আলেম ও সাধারণ মানুষ যারা এই জিহাদের অন্যতম অনুঘটক তারা হানাফী মাজহাবের অনুসারী ও দেওবন্দ মাদ্রাসা ফারেগ অথবা দেওবন্দ সিলসিলার মাদ্রাসা ফারেগ। যেমনঃ দারুল উলুম করাচী যার প্রতিষ্টাতা মুফতী শফি রাহ. যিনি নিজেও দেওবন্দ মাদ্রাসার সাথে যুক্ত ছিলেন। আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর ( দাঃ বাঃ) নিজেও পেশোয়ারে দেওবন্দী সিলসিলার মাদ্রাসা দারুল উলুম হাক্কানিয়াতে ইলম অর্জন করেছেন। এত বেশী তালিবান মুজাহিদীন কমান্ডার এই মাদ্রাসায় পড়েছেন যে, এই মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সামসুল হক ( দাঃ বাঃ ) কে Father of Taliban ডাকা হয়।
কাফিররা দেওবন্দ সিলসিলার মাদ্রাসা নিয়ে কতটা চিন্তিত। এ কারণেই তারা বাংলাদেশেও কাওমী মাদ্রাসার সিলেবাস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। বেনজীর ভুট্টো চেয়েছিল পাকিস্তানের মাদ্রাসা সিলেবাসের পরিবর্তন করতে।
তাই এই কথা নিসন্দেহে বলা যায়ঃ একবিংশ শতাব্দীর জিহাদে দেওবন্দ মাদ্রাসা ও হানাফী মাজহাবের অবদান আল্লাহর রহমতে অনেক। আল্লাহ যেন তাদেরকে এই নুসরত জারি রাখার তৌফিক দান করেন ও অন্যান্য সকলকে তাদের করণীয় কাজ সঠিকভাবে করার তৌফিক দান করেন। সবাই মিলে যেন সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে থাকে যতক্ষন না আল্লাহর দ্বীন এই জমীনে বিজয়ী হয় ও বাতিল দ্বীনসমূহ সমূলে উৎপাটিত হয়।.........আমীন
কুরআন কেহতাহে : তারা মুমিনদের প্রতি নম্র, কাফিরদের প্রতি কঠোর" – (সূরাঃ মায়িদা ৫৪)
No comments:
Post a Comment