Buy IP

********** Welcome to Buy ip **********

Wednesday, July 27, 2016

দুবলহাটী রাজরাড়ি


আবশেষে কালেরগর্ভে হারিয়ে গেল নওগাঁর ঐতিহ্যবাহি দুবলহাটী রাজরাড়ি দেখার কেহ নাই। গত সোমবার রাতে ও দিনে দু’ দফায় ধ্বসে পড়ে রাজবাড়ির সামনের পশ্চিম দিকের একাংশ। দীর্ঘদিন অবহেলায় চাপা পড়ে গেল নওগাঁ জেলার একটি ইতিহাস আর ঐতিহ্য। প্রাসাদের ওই অংশে বসবাসকারী আলম জানান সোমবার বিকেলে একবার ও রাত ১টায় একবারসহ দু’ দফায় ধ্বসে পড়ে প্রাসাদের অংশটি। এসময় তাঁর পালিত প্রায় ৭৬ জোড়া পায়রা প্রসাদের ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে মারা গেছে। প্রাসাদটির যা কিছু ক্ষতি হয়েছে সব করছে মানুষ। এখন প্রাসাদটির দর্শনীয় আর কিছুই রইল না। দীর্ঘদিন রাজবাড়িটি ছিল পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্র। শুধু যথাযথ নজড়দারি ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে প্রাচীন এই রাজবাড়িটি শেষ পরিনতির দিকে। বিশাল এই প্রাসাদের বিভিন্ন স্থাপনা অমানবিক ভাবে একটি একটি করে খুলে নিয়ে গেছে দুবৃত্তরা। যেনো দেখার কেউই ছিলনা। এখন পর্যটকরা দেখছেন আর দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। প্রাসাদটি প্রায় ২’শ বছরের প্রাচিন। নওগাঁ শহর থেকে মাত্র ৬ কিঃ মিঃ দূরে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহি দুবলহাটি রাজবাড়ি। রাজা হরনাথ রায় চৌধুরী ও তার পুত্র রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর সময় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয় রাজ ষ্টেটের। রাজপ্রাসাদের সামনে রোমান স্টাইলের বড় বড় পিলারগুলো রাজাদের রুচির পরিচয় বহন করতো। ১৮৬৪ সালে রাজ পরিবারের উদ্যোগে একটি স্কুল স্থাপন করা হয়। পরবর্তিতে স্কুলটি নামকরন হয় রাজা হরনাথ উচ্চ বিদ্যালয়। বিভিন্ন সূত্র ও ইতিহাস থেকে জানা যায় রঘুনাথ নামের এক ব্যক্তি লবন ও গুড়ের ব্যবসা করতেন। তিনি দীঘলি বিলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত খয়রা নদী দিয়ে নৌকাযোগে দুবলহাটিতে ব্যবসার জন্য আসেন। তিনি প্রায় প্রতিরাতে স্বপ্ন দেখতেন তাঁক কে যেনো বলছে “তুই যেখানে নৌকা বেঁধেছিস সেখানে জলের নীচে একটি প্রতিমা আছে। সেই রাজরাজেশ্বরী দেবীর প্রতিমাটি সেখান থেকে তুলে স্থাপন কর।” রঘুনাথ একদিন ভোর বেলা জলে নেমে দেখলেন সত্যিই সেখানে রাজরাজেশ্বরীর প্রতিমা আছে। তিনি প্রতিমাটি একটি মাটির বেদী তৈরী করে প্রতিষ্ঠা করলেন এবং নিয়মিত পূঁজা করতেন। এরপর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করলো। রঘুনাথের বিত্ত-বৈভবের খবর জেনে যায় মোগল দরবার। মোগল দরবারের নির্দেশে তাঁকে ডেকে পাটান মুর্শিদাবাদের নবাব। নবাব তাঁকে রাজস্ব প্রদানের হুকুম জারি করেন। তিনি নবাবকে জানান তিনি যে এলাকায় থাকেন সেখানে শুধু জল আর জল। কোন ফসল হয়না। তবে বড় বড় কৈ মাছ পাওয়া যায়। বিষয় বুঝতে পেরে নবাব তঁকে প্রতি বছর রাজস্ব হিসাবে ২২ কাহন কৈ মাছ প্রদানের নির্দেশ দেন। এই প্রাসাদে সাড়ে ৩’শ ঘর ছিল। ছিল ৭ টি আঙ্গিনা। ছিল রাজরাজেশ্বরী মন্দির। রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর নাতি ও কুমার অমরেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরীর ছেলে দুবলহাটি রাজ পরিবারের ৫৪ তম পুরুষ রবীন্দ্রনাথ রায় চৌধূরী (৭৬) জানান তাঁদের জমিদারী ছিল সিলেট, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও ভারতের কিছু অংশে। হরনাথ রায় চৌধুরী রাজা খেতাব পেয়েছিলেন। এর আগের পূর্বপুরুষরা মোগলদের দেয়া জমিদার খেতাবে ভূষিত ছিলেন। ২২কাহন কৈ মাছ দিয়ে রাজস্ব প্রদানের বিষয়টি গিনেস বুক অব ওয়াল্ডে অন্তর্ভুক্ত আছে। রাজা কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর পিতা রাজা হরনাথ রায় চৌধুরী অবসাদ যাপনের জন্য “রনবাগ” নামে একটি বগানবাড়ি তৈরী করেছিলেন।


No comments:

Post a Comment