



রঙ্গিন বোরকা পরে পর্দা হয় না। বর্তমানে যে সকল ফ্যাসন্যাবল বোরকা বের হয়েছে তা মোটেই পর্দার বিধান অনুযায়ি নয়। এক সময় বোরকা পরা মেয়ে দেখলেই মনে এই খেয়াল আসত যে, মেয়েটি নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও দ্বীনের বুঝ রাখে বা দ্বীনদার ফ্যামিলির মেয়ে। সপ্তাহ খনেক আগে একটি বোরকা পরা মেয়ে দেখলাম হাতে গিটার নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা একটু কেমন যেন লাগল। পর্দা করে একটি মেয়ে গান-বাজনা করে, এটা কি করে সম্ভব! গত পৌরসু পরীক্ষার হলে এক বোরকা পরা ছাত্রিকে খাতা দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম মেয়েটির আঙ্গুলে নেইল-পালিশ দেয়া, অর্থাৎ মেয়েটি এই রমজান মাসেও নামাজ পরে না। পর্দা করে অথচ নামাজ পরে না। ব্যাপারগুলো ভালো লাগল না। মনে হল বোরকা এখন আর সব মেয়েরা পর্দা করার জন্য ব্যবহার করে না, বরং ফ্যাসনের জন্য ব্যবহার করে। কিন্তু এরকম কেন? আমরা আমাদের মেয়েদের দ্বীন শিখাচ্ছি না বলেই তো এরকম হচ্ছে। মেয়েকে গিটার তো বাবা-মাই কিনে দিচ্ছেন যা রমজান মাসেও ব্যবহার করতে বাবা-মার পক্ষ থেকে কোন নিষেধ নেই। হাদিসে পাকে আছে, যে রমজান মাস পেল অথচ নিজের গোনাহ মাপ করাতে পারল না সে তো ধ্বংস হয়ে গেল।
রমজান আমাদের মাঝে এসেছে, আবার চলেও যাচ্ছে। যে যেই অবস্থাতে আছি কে জানে কতদিন বাচব, কে জানে কবে দুনিয়া থেকে চলে যাব। আসি আমরা সকলে তৌবা করি। এখন মাগফেরাতের মৌসুম। রমজান আমলের মৌসুম। এর মাঝে বড় একটি আমল হল রোজাদারকে ইফতার করানো। সবাই যারযার সামর্থ্য অনুযায়ি রোজাদারদের ইফতার করানো চাই। ইফতার পার্টি করা থেকে বিরত থাকি। ইফতার করানোকে ইবাদত মনে করা চাই, যার দ্বারা আখিরাতে আমি আল্লাহ্র কাছ থেকে প্রতিদান পাব। তামাসা করার জন্য ইফতার পার্টি না করি।
ফিতরা আদায়ে কার্পন্য না করা চাই। সরকারি যে হিসাব দেয়া হয় তাতে ফিতরার হক আদায় হয় না। আমরা কেও গম খাই না। আমরা ১০০ ভাগ বাঙ্গালীই চাল খাই। আর যে যেই চাল খায় সে সেই চালের হিসাবে ফিতরা দিবে কোন এক গরিব পরিবারকে। যে ৩৫টাকা দামের চাল খায় সে ৩৫ টাকা দামের চালের হিসাব করবে, যে ৫০ টাকা দামের চাল খায় সে ৫০ টাকা দামের চালের হিসাব করবে। ৫ টাকা করে ফকিরকে দিয়ে ফিতরা দেয়া উচিত নয়। আর যাদের কিছুটা সামর্থ্য আছে তারা ফিতরা দিবে খেজুর বা কিসমিসের দাম হিসাব করে।
আর যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে পুরাপুরি হিসাব করে দিতে হবে। এটা গরিব মুসলমানের হক। যাদের যাকাত আসে তারা নিকটস্থ কোন মসজিদ বা মাদ্রাসার মুফতি সাহেবদের সাথে পরামর্শ করে যাকাতের হিসাব করে নিবে। তারপর যাকাতের মাল কোন একজন গরিব মুসলমানকে দেয়া উচিৎ। কয়েকজনের জাকাতের টাকা একত্রিত করে যদি কোন গরিব মুসলমানের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় তাহলে এই ব্যাক্তিকে পরের বছর আর জাকাতের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। আর যারা মানুষকে দেখানোর জন্য লাইন ধরিয়ে জাকাতের শারি লুঙ্গি বিতরণ করে এবং ছবি তুলে এদের উপর আল্লাহ্ ও তার রসুল (সাঃ)-এর লানত।
দুনিয়াতে আমদের একটাই জীবন। যা কিছু করার দুনিয়াতেই করে যেতে হবে। মৃত্যুর পর হায় হায় করে কোন লাভ হবে না। দুনিয়ার জীবন ধোকা ছাড়া কিছুই নয়। আজ আমরা যা কিছু নিয়ে ব্যস্ত মৃত্যুর পর এই সব কিছু আমার মুসিবতের কারণ যেন না হয়। আজ যারা আমার আপন মৃত্যুর পর তারাই যেন আমার দুশমন না বনে যায়।
No comments:
Post a Comment