Buy IP

********** Welcome to Buy ip **********

Friday, February 12, 2016

ঈমানের শাখা- প্রশাখা


আল্লাহ্‌কে সন্তুষ্ট করার যে সমস্ত পন্থা আছে বা যত প্রকার নেক ও সৎকাজ আছে উহার প্রত্যেকটিই মূল ঈমানের শাখা- প্রশাখা; অতএব, ঈমানের শাখা অনেক। ইমাম বোখারী (রঃ) এখানে কোরআনের দুইটি আয়াত উদ্ধৃত করিয়াছেন, যাহাতে মানব জাতির কল্যাণের ও সত্যিকারের মানুষ হওয়ার পন্থারূপে স্বয়ং আল্লাহ্‌ তায়ালা কয়েকটি মোটামোটি কাজ আঙ্গুলের উপর গণনা করিয়া দিয়াছেন। সেই হিসাবে আয়াত দুটি অতি মূল্যবান ও অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন, তাই এখানে উহার ব্যাখ্যা বিশেষভাবে করা হইতেছে। প্রথম আয়াতঃ-

প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা  ৩৮ বোখারী শরীফ

অর্থঃ- প্রকৃত প্রস্তাবে নেক ও সৎকাজ এইগুলিঃ- (১) সর্ব প্রথমে মোটামূটি কয়েকটি বিষয়ের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপনের দ্বারা দেল ও অন্তরকে ঠিক করিতে হইবে- (ক) আল্লাহ্‌কে বিশ্বাস করিয়া ভয় ও ভক্তির সহিত তাঁহার আনুগত্য স্বীকার করিতে হইবে এবং উপলব্ধি করিতে হইবে যে, আল্লাহ্‌ই আমাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তাঁহার নিকট হইতেই আমরা আসিয়াছি। (খ) আবার একদিন আমাদের সকলকেই আল্লাহ্‌র নিকট ফিরিয়া যাইতে হইবে এবং বিচারের সম্মুখীন হইতে হইবে। চোখ, কান, হাত, পা, জ্ঞান, বুদ্ধি, আলো- বাতাস, ধন- দৌলত ইত্যাদি যাহা কিছু নেয়ামত আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদিগকে দান করিয়াছেন। আমরা উহার সদ্ব্যবহার করিয়াছি কি অসদ্ব্যবহার করিয়াছি তাহার হিসাব দিতে হইবে। সেই শেষ বিচারের দিনের উপর বিশ্বাস স্থাপন করিয়া আল্লাহ্‌ প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের সদ্ব্যবহার করতঃ হিসাব দিবার জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে। (গ) ফেরেস্তাদের সম্বন্ধে বিশ্বাস স্থাপন করিতে হইবে যে, তাঁহারা নিষ্পাপ, ত্রুটিহীন; কখনও আল্লাহর  বিরুদ্ধাচরণ করেন না, বা তাঁহাদের দ্বারা কোন ভুল- ত্রুটি হওয়া সম্ভব নহে। তাঁহারা আল্লাহ্‌র বানী পয়গম্বরগণের নিকট অবিকলরূপে পৌছাইয়া দিয়াছেন, বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম হয় নাই এবং ইহাতে সন্দেহের অবকাশ মাত্র নাই। (ঘ) আল্লারহ কোরআনকে পুর্নভাবে বিশ্বাস করিতে হইবে যে, ইহার অন্তর্গত কোন একটি অক্ষরের মধ্যেও আদৌ কোনরূপ সন্দেহ, দোষ বা ভুল- ত্রুটি নাই। (ঙ) আল্লার নবীগণের প্রতি পুর্ণ আস্থা স্থাপন করিতে হইবে যে, তাঁহারা আল্লাহ্‌র প্রেরিত সম্পূর্ণ নিষ্পাপ মানুষ ও সত্য পথ প্রদর্শক ছিলেন। যে যুগের, যে দেশের বা যে জাতির জন্য যিনি নবী হইয়া আসিয়াছেন- সেই যুগের, সেই দেশের সমগ্র জাতি তাঁহাকেই আদর্শকরূপে মানিয়া চলিতে হইবে, যেমন- কেয়ামত পর্যন্ত শেষ যুগের জন্য সমগ্র বিশ্বমানবের পয়গাম্বর হইলেন হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ)। কেয়ামত পর্যন্ত সকলকে একমাত্র তাহাঁরই আদর্শ অনুসরণ করিয়া চলিতে হইবে।
(২) পার্থিব ধন- দৌলত ও বিষয়- সম্পত্তির দিকে স্বভাবগত ভাবে মানুষের মনের মায়া ও আকর্ষণ থাকা সত্বেও আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি লাভের জন্য ধন সম্পত্তি যথাস্থানে দান করিতে হইবে। যথা- ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দিগকে, (পিতৃহীন, কর্মশক্তিহীন অসহায়) এতিম বালক বালিকাদিগকে, অভাবগ্রস্ত দরিদ্রদিগকে, (যাহারা কঠোর পরিশ্রম করিয়াও অভাব মোচনে অক্ষম) পথিকদিগকে, ( যাহারা প্রবাসে অভাবে পরিয়াছে), যাঞ্জাকারী ভিক্ষুকদিগকে, ( যে সব অন্ধ, খঞ্জা, বৃদ্ধ, রুগ্ন ও আতুর ইত্যাদি কর্মশক্তিহীনতার দরুন ভিক্ষা করিতে বাধ্য হইতেছে।) এবং দাসত্বে আবদ্ধ মানুষকে, ( তাদের মুক্তির জন্য) দান করিতে হইবে।
(৩) আল্লাহ্‌র নির্দেশিত এবং তাঁহার রসূলের (সাঃ) প্রদর্শিত নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহ্‌র দাসত্বের প্রতীক নামায কায়েম ( পূর্ণাঙ্গে আদায় ও জারী) করিতে হইবে।

প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা  ৩৯ বোখারী শরীফ

 (৪) স্বীয় ধনের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত স্বরূপ দিতে হইবে।
(৫) অঙ্গীকার করিলে উহা রক্ষা করিতে হইবে। ( আল্লাহ্‌র সহিত অঙ্গীকার বা মানুষের সহিত অঙ্গীকার- সমস্ত অঙ্গীকারই অক্ষরে অক্ষরে পালন করিতে হইবে)।

(৬) ধৈর্য্যধারনের অভ্যাস করিতে হইবে। ভীষণ বিপদের সময়। যাহারা এই সৎগুণাবলী অর্জন করিতে সক্ষম হইবে, তাহারাই খাঁটি সত্যবাদী এবং তাহারাই প্রকৃত ঈমানদার ও মোত্ত্বাকী পরিগণিত হইবে। (২ পাড়া ৬ রুকু)


No comments:

Post a Comment