Buy IP

********** Welcome to Buy ip **********

Tuesday, September 29, 2015

ছেলেকে যেমন আদর দিবে কন্যাকেও তেমনই আদর দিও

প্রাক-ইসলামী যুগে নারীদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো মর্যাদা স্বীকৃত ছিল না সে যুগে কন্যা সন্তান জন্মদান ছিল পিতা-মাতার জন্য অপমানজনক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে পিতা-মাতার মুখ দুঃখে বিবর্ণ হয়ে যেতো এবং অনেকে তাদেরকে জীবন্ত কবর দিতো মহান আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন- তাদের কাউকে যখন কন্যা জন্মের সুসংবাদ দেয়া হয়, তাদের চেহারা কালো ছায়ায় মলীন হয়ে যায় এবং তারা হয়ে যায় মর্মাহত তাকে যে সংবাদ দেয়া হল, তাতে লজ্জায় সে সমাজের লোকদের থেকে পালিয়ে বেড়ায়, সে ভাবে, সে কি এ অপমান সইয়ে চলবে, না কি তাকে মাটির নিচে লুকিয়ে ফেলবে বুঝে দেখ! কি মন্দ সিদ্ধান্ত সে নিচ্ছে [সূরা নাহল:৫৮-৫৯]
সূরা তাকভীরে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? [সূরা তাকভীর: ৮-৯]
আধুনিক সভ্যতার যুগে কন্যা সন্তানকে জাহেলী যুগের মত যদিও জীবন্ত কবর দেয়া হচ্ছে না ঠিক; কিন্তু জন্মের পূর্বেই ডিজিটাল কায়দায় ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে কন্যা ভ্রুণ হত্যা করা হচ্ছে, যা জীবন্ত হত্যারই শামিল  আল্লাহ তাআলা বলেন-       
তোমরা দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না, আমিই তাদেরকে রিযিক প্রদান করি এবং তোমাদেরও [সূরা বনী ইসরাইল-৩১ আয়াত]
এই আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, শুধু কন্যা সন্তান নয়, সকল ধরনের সন্তান হত্যা ইসলামে নিষিদ্ধ কেননা সকল জীবের রিযিক তিনিই দিয়ে থাকেন
আজও কোনো কোনো পিতা-মাতা কন্যা সন্তান লাভ করলে, তাদের মধ্যে এক ধরনের মনোকষ্ট দেখা যায় আর পুত্র সন্তান লাভ করলে  পিতামাতা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেএমনকি পুত্র সন্তান লাভের আশায় কিছু কিছু পিতা-মাতাকে পীর, মাজার ও কবিরাজের কাছে শরণাপন্ন হতে দেখা যায়, যা শিরকী এবং ভ্রান্ত ধারণা বৈ কিছুই নয়
আবার কোথাও কন্যা সন্তান জন্মদান করার কারণে স্ত্রীকে দোষারোপ করা হয়ে  থাকে এবং স্ত্রী কন্যা সন্তান জন্মদানের কারণে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের ঘটনাও লক্ষ্য করা যায়  অথচ পুত্র ও কন্যা সন্তানদান  আল্লাহ তাআলার একান্ত ইচ্ছা
তিনি বলেন, ‘আসমান জমিনের সার্বভৌম বাদশাহী একমাত্র আল্লাহ্ তাআলার তিনি যা ইচ্ছে তাই সৃষ্টি করেন যাকে ইচ্ছে তাকে তিনি কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছে তাকে পুত্র সন্তান দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছে নিঃসন্তান করেন তিনি মহাজ্ঞানী ও সর্বশক্তিমান। [সূরা আশ-শূরা, ৪৯-৫০ আয়াত]   
ইসলামে কন্যা সন্তান লালন-পালনে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রথম সন্তান যাদের কন্যা, তারা হলো ভাগ্যবান পিতা-মাতা
রাসূূলুল্লাহ (সা.) এও ইরশাদ করেছেন- তোমরা কন্যাদের ঘৃণা করো না, কেননা আমি নিজেই কন্যাদের পিতা
ইসলামে কন্যা সন্তান জন্মদানকারী পিতা-মাতাকে ভাগ্যবান এবং জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে আমরা যদি অন্যান্য ধর্মের দিকে দৃষ্টি দেই, সেখানে  নারীদের বিভিন্ন ভাবে বিষোদগার করা হয়েছে যেমন- হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে থাকে, “হে ভগবান! কন্যা সন্তান অন্যত্র দান করো, আমাদের পুত্র সন্তান দাও
যে ধর্মে জীব হত্যা মহাপাপ, যাদেরকে মানবদরদী বলা হয়, সে ধর্মেও নারীদের প্রতি তেমন কৃপার দৃষ্টি দেয়া হয়নি বৌদ্ধ ধর্ম মতে, “নারীরাই সকল পাপের জন্য দায়ী
ইহুদী ধর্ম মতে, “নারীদের গুণের চেয়ে পুরুষের দোষও ভালো
আর খ্রীস্টান ধর্ম মতে, “নারীরাই নরকের দ্বার
অথচ ইসলামে বলা হয়েছে- যে ব্যক্তির একটি কন্যা বা বোন আছে এবং তাদের জীবন্ত কবর দেয়নি, অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করেনি, আর পুত্র সন্তানকে কন্যা সন্তানের উপর প্রাধান্য দেয়নি, সে জান্নাতী [সুনানে আবু দাউদ]
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি তার দুটি কন্যাকে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়া পর্যন্ত সুন্দরভাবে লালন-পালন করেছে, শিক্ষিত করেছে এবং সৎ পাত্রে পাত্রস্থ করেছে, কিয়ামতে সে আর আমি একত্রে থাকবো [সহীহ্ মুসলিম]
কন্যাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ আরো বলেছেন- যখন কারো গৃহে কন্যা জন্মগ্রহণ করেআল্লাহ সেখানে ফেরেশতা প্রেরণ করেন তারা এসে বলে, হে গৃহের বাসিন্দারা, তোমাদের উপর সালাম ফেরেশতারা ভূমিষ্ট কন্যাকে নিজের পাখার ছায়াতলে নিয়ে নেন এবং তার মাথার উপর নিজেদের হাত রেখে বলতে থাকেন,   এটা একটি দুর্বল দেহ, যা একটি দুর্বল জীবন থেকে জন্ম নিয়েছে যে ব্যক্তি এ দুর্বল জীবনের প্রতিপালনের দায়িত্ব নেবে, কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর সাহায্য তার সাথে থাকবে। [মুজমাউস সাগীর]
কন্যা সন্তান লালন-পালন জাহান্নামের আগুনের প্রতিবন্ধক হবে হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন, আমার নিকট দুকন্যাসহ একজন মহিলা ভিক্ষার জন্য আসল সে সময় আমার নিকট কিছুই ছিল না, শুধুমাত্র একটি খেজুর ছিল খেজুরটি আমি তার হাতে দিলাম সে খেজুরটি দু ভাগে ভাগ করে দু কন্যাকে দিল এবং নিজে তা চেখেও দেখল না অতঃপর উঠে দাঁড়ালো এবং চলে গেল এরপর নবী কারীম (সা.) যখন ঘরে আসলেন, তখন আমি তাকে এ ঘটনা শুনালাম তিনি বললেন, যে ব্যক্তিকেই এমন কন্যার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়েছে, এরপর সে তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করেছে, তাহলে এ কন্যারাই তার জন্য জাহান্নামের আগুনের প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়াঁবে। [বুখারী ও মুসলিম]
রাসূলুল্লাহ (সা.) কন্যা প্রতিপালনের জন্য বেহেশতের সুসংবাদ দিয়েছেন তিনি বলেছেন-যে ব্যক্তির তিনটি মেয়ে এবং সে তিনটি মেয়েকেই নিজের অভিভাবকত্বে রেখেছে তাদের প্রতি রহম করেছে তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে কোনো গোত্রের এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! যদি দু কন্যা হয়? রাসূলুল্লাহ (সা.) জবাব দিলেন, যদি দু কন্যা হয়, তাহলেও এ সওয়াব পাওয়া যাবে রাবী বলেন যে,মানুষ যদি এক কন্যার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেন, তাহলে তার ব্যাপারেও রাসূলুল্লাহ (সা.) এ সুসংবাদই দিতেন
হাদীসে এসেছে, “নবী কারীম (সা.)এর উপস্থিতে এক লোক তার ছেলেকে চুমু দিলো; কিন্তু মেয়ের সাথে তেমনটি করলো না রাসূলুল্লাহ (সা.) সাথে সাথে এ ঘটনার প্রতিবাদ করলেন এবং বললেন, তুমি অন্যায়কারী, তোমার উচিত তোমার মেয়েকেও চুম্বন করা এবং তাকে অন্য ঊরুতে বসানো
নবী কারীম (সা.) শুধু ন্যায় বিচারের কথা মুখে বলতেন না, বাস্তবেও  নমুনা উপস্থাপন করতেন পারিবারক জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক  ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামের নির্ধারিত বিধানুযায়ী কন্যা সন্তানের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য তাই আসুন, আমাদের কন্যা সন্তানদেরকে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে লালন-পালন করে দুনিয়াতে ও আখিরাতের কামিয়াবী অর্জন করি আমীন



No comments:

Post a Comment