Buy IP

********** Welcome to Buy ip **********

Monday, November 2, 2015

এদেশের মুসলমানদের হুঁশ কবে হবে - মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান


গত এক-দেড় যুগ থেকে আমাদের বাংলাদেশে দুটো বিশেষন বহুল প্রচলিত তার একটা জঙ্গী এবং অন্যটা জিহাদী বই যখন কোনো ইসলামী লেবাসধারীকে কারণে বা অকারণে পুলিশ গ্রেফতার করেবলা হয় জঙ্গী ধরা হয়েছে এবং ফলাও করে আরেকটা কথা প্রচার করা হয় যে,গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের কাছ থেকে কিছু জিহাদী বই পাওয়া গেছে কিন্তু সেসব জিহাদী বইয়ের নাম তালিকায় জানানো হয় না তাই আমরাও জানতে পারি নাজিহাদী বই কোন বই?
এই ধাঁচের খেলাটা এক সময়ে মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি মুসলিম দেশের মধ্যে ছিল সীমাবদ্ধ ক্রমে তা’ ছড়িয়ে পড়েছে পাকিস্তানে এবং বাংলাদেশেও জানার বিষয় হলোএই জঙ্গী জিহাদীর আবিষ্কারক কারা এবং এর উদ্দেশ্য কী?
মুসলমানদের মধ্যে প্রধান দুটি বিভক্তি রয়েছে যথা- শিয়া এবং সুন্নীশুধু এ পর্যন্ত নয়বিভক্তি আরো আছেযথা খারেজীমুতাজিলা,ইসমাঈলিয়াআহমদীয়াবাহাইয়্যা ইত্যাদি আরো আছে মযহাবী এবং লা-মাযহাবী আছে দেওবন্দী এবং আলীয়ার কিছু কিছু পার্থক্য আচার-আচরণে এবং পোষাক পরিচ্ছদে এ পর্যন্ত শেষ হলেও কথা ছিল নাআরো আছেবিভিন্ন ছিলছিলার পীরের দরবার একের সঙ্গে অন্যের সব কিছু মেলে না তাছাড়াও আছে কিছু বিদআতী পীরের দরগাহমাজারযেখানে গদীনসীন পীর কেউ নেইআছে মদখোর গাঁজাখোর কিছু খাদেম যেমন- সিলেটের হযরত শাহ জালাল (রাহ.)বাগেরহাটের পীর খানজাহান আলীচট্টগ্রামের কথিত বায়জিদ বোস্তামী এবং মাইজ ভান্ডারী মাজার ও দরগাহের খাদেম থাকুক যতো খুশিতাতে কারো ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি থাকতে পারে পাইকারী হারে কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই হ্যাঁ বলতে ভুলে গেছিআমাদের দেশে আরো আছেলালন ফকিরের বাউল মতবাদ এটার মধ্যে কিঞ্চিত ইসলামী আবহ (গানে) থাকলেও প্রকৃত মুসলমানিত্বের চর্চা নেই বললেই চলে বাংলাদেশের বহু বুদ্ধিজীবী লালন শাহ্র ভক্ত
যারা ঈমানদার মুসলমান তারা বিশ্বাস করেন আসমানী কিতাব আল-কুরআনের বানী তাতে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ইরশাদ করেছেনআমি জ্বীন এবং ইনসানকে (মানুষ) আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি এই কথাতে বিশ্বাস সুদৃঢ় থাকলে আমাদের আর আল্লাহর নাফরমানী করার সাহস হয় না সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালাকে আমরা দেখি না কিন্তু সৃষ্টিকে আমরা দেখতে পাই তাঁকে কাজ করতে আমরা দেখি নাকিন্তু তার ফলাফল আমরা ভোগ করি
মানুষ অনেক কিছু আশ্চর্য কাজও করতে পারে কিন্তু পারে নাএমন কাজও সংঘটিত হয় ছেলেবেলায় এক নাটকে এক কূটবুদ্ধির নায়কের (যাকে আজকাল বলে ভিলেন বা খল চরিত্র) মুখে সংলাপ শুনেছিলাম, এই শর্মা সম্ভব-অসম্ভব সব কাজই করতে পারে পারে না শুধু মরা মানুষ বাঁচাতে আসলেও তাই মানুষের সব কিছু সাধ্যায়ত্ব নয় কেননা মানুষ সর্বশক্তিমান নয় একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা সর্বশক্তিমান তাঁর অসাধ্য কিছু নাই তিনি কুন তথা হও; বললেই যে কিছু হয়ে যেতে পারেমানুষ সহজে যা পারে তাহলো বিসমিল্লাহকে সৃষ্টিকর্তার নামে বলাকেননাসে কারণে শাসন আসে নাছুটে ঝটিকা তুলি অবশ্য কথা হচ্ছে শুধু মুসলমানকে নিয়ে
আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ আসমানী কিতাব আল-কুরআন শেষ এবং শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে পথভ্রষ্ট মানুষকে হিদায়াতের উদ্দেশ্যে মহানবী (সা.) আরব দেশের মক্কা নগীরিতে জন্মগ্রহণ করেন আজ থেকে ১৪৩৬ বছরেরও আগে আল্লাহ তায়ালা তাঁর ফিরিশতা হযরত জিবরাইল (আ.)এর মাধ্যমে আল-কুরআনের বাণী রাসূল (সা.)এর কাছে পৌঁছান এভাবেই আল-কুরআনের বাণী মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছার সুযোগ হয়েছে আল-কুরআনেই ইরশাদ করা হয়েছে, {এটা সেই কিতাবযাতে কোনো সন্দেহ নেই মুত্তাক্বিদের জন্য ইহা পথনির্দেশযারা অদৃশ্যে ঈমান আনেসালাত কায়েম করে এবং তাদেরকে জীবনোপকরণ দান করেছে তা হতে ব্যয় করেএবং তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা নাযিল হয়েছেতাতে যারা ঈমান আনে এবং আখিরাতে যারা নিশ্চিত বিশ্বাসীতারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত পথে রয়েছে এবং তারাই সফলকাম যারা কুফরী করেছেতুমি তাদেরকে সতর্ক কর বা না করতাদের পক্ষে উভয়ই সমানতারা ঈমান আনবে না আল্লাহ তাদের হৃদয় ও কর্ণ মোহর করে দিয়েছেনতাদের চক্ষুর উপর আবরণ রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি} (সূরা বাক্বারা- ২-৭)
ঈমানদার মুসলমানদের করণীয় বিষয়াদি আল-কুরআন এবং রাসূল (সা.)এর শরীয়া আইনের ভিতরেই সব রয়েছে যা মুসলমানদের অকর্তব্য তারও নির্দেশনা রয়েছে কুরআন-হাদীসে কোনো স্থলে বুঝতে সক্ষম না হলে কুরআন হাদীসবেত্তা হক্কানী আলেমের নিকট থেকে বুঝ পাওয়া যাবে অতএবকোনো সমস্যা নেই তবে দাদন খাওয়া নড়বড়ে ঈমানের আলেমদের সরণাপন্ন হলে সৎপরামর্শ পাওয়ার সম্ভবনা নেইতারা অনেক নাজায়েযকে জায়েয বলে ফেলেতারা কুরআন হাদীস মতে গর্হিত কর্মও করে থাকনে উদাহরণত বলা যাকএকজন আব্দুস সালাম ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে না পেরে কালীভক্ত এক হিন্দু ওঝার (কবিরাজ) চিকিৎসা নিতে থাকা অবস্থায় স্বপ্নে তাঁকে কালীমাতা বলেনআমার পূজা দিলে তুই এ রোগ থেকে মুক্তি পাবি তারপর আব্দুস সালাম হিন্দু পাড়ায় গিয়ে কালীপূজা দিল কিন্তু মাসখানেক পরে তার মৃত্যু ঘটে এই আব্দুস সালামের জানাযায় সেই আলেম ইমামতি করেন এমন আলেমের কাছে ইসলামের সত্য ও সঠিক পথের সন্ধান পাওয়া যাবে না এটি পিরোজপুরেরই এক সত্য ঘটনা নাম-পরিচিতি এখানে উল্লেখ করলাম না
ইসলামী বিষয়ের কোনো ফয়সালা পেতে হলে হক্কানী আলেমের কাছে যেতে হবে আলেমদের মধ্যে আবার দুটো শ্রেণী আছে যেমন আধুনিক প্রগতিবাদী এবং কঠোর মৌলবাদী আধুনিকেরা বেশ খাটো করে ফ্রেন্স কাট দাঁড়ি রাখে আর মৌলবাদীরা দাঁড়িতে কাঁচি ছোঁয়ায় না কিংবা ছোঁয়ালেও একমুষ্টির চেয়ে খাটো করেন না হক্কানী আলেম চিনতে হবে এইসব আমল-আখলাক দেখে তাদের কথাবার্তা শুনলেও চেনা যাবে,যদি মগজে কিছুমাত্র সুবুদ্ধিভাল কিছু গ্রহণ করার গভীর বাসনা এবং আল্লাহভীতি থাকে
অবিভক্ত ভারত বর্ষ যে হিন্দুর দেশ ছিলতা ঐতিহাসিক সত্য সেকালে তার নামকরণও হয়েছিল এক সময়ে আর্যাবর্ত তাদের মধ্যেও ছিল বহু বিভক্তিবর্ণবাদএকের স্পর্শ অপর বর্ণের কাছে নিষিদ্ধ একের ছোঁয়া অন্যে খেতে পারতো না তবে ধর্ম তাদের একই বৈদিক ধর্ম এর অপর দুটি নামও প্রচলিত ছিল যথা- হিন্দু ধর্মসনাতন ধর্ম তাদের ছিল দেব-দেবী তাদের সংখ্যাও ছিল প্রচুর তাই একই ধর্মের মধ্যেশাক্তবৈষ্ণব,শৈব প্রভৃতি নামের অনেক সম্প্রদায়ের বিভক্তি ছিল আবার পুতুল পূজার বিরোধী এক সম্প্রদায় ছিল ব্রাহ্ম নামে আবার গুরু ননক (পাঞ্জাবের) প্রচার করেন শিখ ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম একটি পৃথক ধর্ম হলেও তার সঙ্গে বেদের মিল আছে আরভারতে এ ধর্মের প্রভাব প্রতিপত্তি এক সময়ে অল্প ছিল না
১১৯৩ খ্রীস্টাব্দে গজনীরাজ দিল্লীশ্বর পৃথ্বীরাজকে পরাজিত করে ভারতে মুসলিম সাম্রারাজ্যের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অতঃপর ১৮৫৭ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে মুসলিম সাম্রাজ্য মোটামুটি বহাল থাকলেও ১৭৫৭ সালে ভারতে বাণিজ্যরত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সুবা বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করে কোম্পানী শাসনের সূত্রপাত করে এক সময়ে মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে বৃত্তিভোগী করে গোটা ভারতের শাসন ক্ষমতা ব্রিটিশ কোম্পানীর হাতে নিয়ে নেয় ১৮৫৮ খ্রীস্টাব্দে ব্রিটেনের রাণী ভিকটোরিয়া ভারত সম্রাজ্ঞী হয়ে বসেন অবশ্য তিনি ব্রিটেন থেকে তাঁর প্রতিনিধির (গভর্ণর জেনারেল) মাধ্যমে এ দেশ শাসন করতেন অতঃপর ভারতে পাশ্চাত্যের ভাষাসাহিত্যসংস্কৃতির প্রচার প্রসার অবাধ হতে থাকেভারতবর্ষে ৬৫০ বছর মুসলিম শাসন বহাল থাকলেওমুসলমান ছিল সংখ্যা লঘিষ্ঠ মুসলিম শাসকবর্গ এদেশে রাজ্য বিস্তারের চেষ্টা করেছেনকিন্তু ধর্ম বিস্তারে মনোযোগ দেননি বরং সংখ্যগরীষ্ঠ হিন্দুদের নিয়ে মিলেমিশে রাজ্য শাসনের চেষ্টা করেছেন তবুও শেষ রক্ষা হয়নিমুসলিম শাসনের পতনের পর ইংরেজ (খ্রীস্টান) শাসকদের আনুগত্যে হিন্দুরা সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে থাকে মুসলমানরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই ইংরেজ বিরোধী মনোভাব পোষণ করতেন তাদের ভাষা ইংরেজী শেখায় ছিল প্রবল আপত্তি কালক্রমে তাদের মত পরিবর্তন করতে হয় তবুও প্রশাসন ও শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানরা হিন্দুদের চাইতে অনেক পেছনে পড়ে থাকে
ব্রিটিশ রাজের শাসন চলে মাত্র ৯০ বছর ভারতীয় হিন্দু মুসলমান পৃথকভাবেকখনো বা একযোগে স্বাধীনতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে ভারতীয় হিন্দুরা চাইতো অখন্ড ভারতের স্বাধীনতা এক সময়ে মুসলমানরা চাইলো বিভক্তিযার নামকরণ হয়- Two-nation theory বা দ্বিজাতিতত্ব ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্ত হয়ে স্বাধীন হলোঅধিকাংশ নিয়ে ভারত ডমিনিয়ন এবং অল্প কিছু অংশ নিয়ে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান আর এই পাকিস্তান পেলো বঙ্গদেশের বিভক্ত অংশ পূর্ববাংলা পশ্চিম বঙ্গ থাকলো ভারত ডমিনিয়নে ভারত ডমিনিয়নে হিন্দু সংখ্যাগরীষ্ঠ হলেওসেখানে মুসলমানের বসবাসও থাকলো আর,পাকিস্তানের পূর্বাংশ পূর্ব বাংলায় থেকে গেল কিছু সংখ্যা হিন্দু-বৌদ্ধ দেশীয় খ্রীস্টান সব মিলিয়ে ১০% অমুসলিম আবার দুই পাকিস্তানের মধ্যে থাকলো বিশাল ভারত দুই পাকিস্তানের মধ্যে দুরত্ব প্রায় ১৪ শত মাইলের দেশের আইন কানুন থাকলো প্রায় অপরিবর্তিত ব্রিটিশ আমলেও যেমনস্বাধীন পাকিস্তানেও তেমনি ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ থাকলেও পাকিস্তান ব্যাংক-বীমা থেকে সূদ বর্জন করেনি মদ-গাঁজা মুসলমানের জন্য হারাম কিন্তু এসব ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করেনিপাকিস্তান শুধু মুসলিম রাষ্ট্র হলো ইসলামী রাষ্ট্র হলো না
১৯৭১ সালে উপনিবেশবাদী পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করেবাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে ৯ মাস ধরে চলে মুক্তিযুদ্ধসীমাহীন ক্ষয়-ক্ষতিঅগণিত জীবন ও মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলার স্বাধীনতা অবশ্য প্রতিবেশী ভারত সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করেছে আমাদের এ যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের একটি স্বাধীন এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র সৃষ্টি হলো (লোক সংখ্যার অনুপাতে) কিন্তু ৯০% মুসলমানের স্বাধীন বাংলাদেশ ধর্ম রাষ্ট্র হলো নাহলো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তবে আবার এই ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ধর্ম থাকলো ইসলাম সোনার পিতলের কলসের মত অদ্ভূত ব্যাপার আর কি!
অধুনা বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধিদের সদম্ভ পদচারণা দৈনন্দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশ্বে ইসলাম ব্যতীত আরো বহু ধর্ম প্রচলিত আছে সেই সকল ধর্ম নিয়ে সেই সকল ধর্মাবলম্বীরাও তাদের ধর্ম নিয়ে টিটকারি করে নাএমনকি মুসলমানরাও অন্যান্য ধর্ম নিয়ে কিংবা ধর্মের প্রচারকদের নিয়ে কটূক্তি করে না মুসলমানদের মহানবী (সা.)এর জীবনালেখ্য নিয়ে সালমান রুশদি Satanic Verses লিখলেওঅন্য ধর্মের কোনো ধর্মপ্রচারককে নিয়ে এ ধরণের বই কেউ লিখেছে বলে কখনো শুনিনিকিন্তু বাংলাদেশের মুসলমান ব্লগাররা মহানবী (সা.)এর ব্যাঙ্গচিত্র এঁকে প্রকাশ করে এমনকি আমাদের দেশের মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীও এ থেকে বাদ যান না এ নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতিবাদ করলে কোনো ফলোদয় হয় না বরং একটু বাড়বাড়ি করলে জঙ্গী নামে আখ্যায়িত হয়
জঙ্গী শব্দটা জংগ থেকে উৎপন্ন জংগ মানে যুদ্ধ জঙ্গী মানে যোদ্ধাকিন্তু এই ইসলাম বিরোধিতার প্রতিবাদীরা জঙ্গী নামে আখ্যায়ীত হয়এই জঙ্গীর মানে সন্ত্রাসী যেমন মীর জাফর মানে বিশ্বাস ঘাতক বুঝানোর মতো আর কি কিন্তু মুসলমান ব্যতীত অন্যান্য ধর্মের লোক যারা যুদ্ধ করেমানুষ মারেতারা সন্ত্রাসী নয় তবু সন্ত্রাস দমনকারী শান্তির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাতিমান প্রতিটি ধর্মের মধ্যেই মত পার্থক্য রয়েছে
হিন্দু ধর্মের মত পার্থক্যের কথাতো আগেই বলেছি এ ধর্মের এক মহাপুরুষ বলেছেন {যত মততত পথ} আর তার শিষ্য বিবেকানন্দ বলেছেন, {জীবে প্রেম করে যেই জনসেই জন সেবিছে ঈশ্বর} তাদের ঈশ্বরাবতার শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন-
যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে ত্বাংস্তথৈব ভজম্য হম
অর্থাৎ- যেভাবে যে আমাকে চায়সেভাবেই আমাকে ভজনা করেকিংবা যেভাবেই যার ভজনা হোকতা আমাকেই ভজনা করা হয়
যাহোকমত পার্থক্য থাকলেও হিন্দুরা মতান্তর নিয়ে মনান্তর করে না,লাঠালাঠীতো নয়ই তাই তারা একত্রে পংক্তি ভোজনে না বসলেও হিন্দুত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব হয় না বৌদ্ধদের মহাযানীহীনযানী,কনফুসীয়দের মধ্যে বিরোধ নেই খ্রীস্টানদের মধ্যেও ক্যাথলিক,প্রোটেস্ট্যান্টব্যাপটিস্ট ইত্যাদি বিভাজন আছে তবুও তারা বিশ্বাস রাখে যেএসব মতপার্থক্য থাকলেও তাদের jesus saves from hell বিশ্বাসে তারা এক পরস্পর কাদা ছোঁড়াছুড়ি করতে তাদের খুব দেখা যায় না
তাই তারা অর্থাৎ- সকল অমুসলমানরা সুযোগ নিচ্ছে বিশ্বের সকল মুসলমান দেশকে হীনবল করে রেখেমুসলিম দেশের সম্পদ লুটেপুটে খেতে আমরা আহম্মক মুসলিমরা বা শাসক শ্রেণী তা’ বুঝতে পারছি না আর সেই পালের গোদা আমেরিকা যেখানে মুসলমানে মুসলমানে কোন্দলসেখানেই সে নাক গলিয়ে ফায়দা লুটছে আর সেই সব মুসলিম দেশকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে কিন্তু ফিলিস্তিনে মুসলমানরা সুদীর্ঘ ৬০/৭০ বছর ধরে অবৈধ দখলদার ইসরাঈলী ইহুদীদের মার খেয়ে চলেছে এবং মায়ানমারে (সাবেক ব্রহ্মদেশ)এর রাখাইন প্রদেশের (সাবেক আরাকান রাজ্য) রোহিঙ্গা মুসলমানরা নিজ দেশে পরবাসী হয়েও (নাগরিকত্বহীন) থাকতে পারছে না সরকারী সেনাবাহিনী ও রাখাইন নাগরিকরা মিলে তাদের মেরে ধরে দেশ ছাড়া করছে
প্রতিবেশী মুসলিম দেশসমূহ থেকেও তাদেরকে দূর দূর করে তাড়ানো হচ্ছে সমুদ্রে ভেসে ভেসেও তারা বাঁচতে পারছে না এসব জায়গায় আমেরিকার নাক গলানোর প্রয়োজন হয় না ওখানে যদি উল্টোটি হতোঅর্থাৎ ফিলিস্তিনী আরাকানীদের দাপটে ইহুদী বর্মী বৌদ্ধরা নাজেহাল হতে থাকতোতাহলে সেখানে আমেরিকার সাহায্যের দীর্ঘ হাত আরো সম্প্রসারিত হতো কেননা সেখানে তখন মুসলমান জঙ্গী দমনের আবশ্যকতা তৈরী হতো আমেরিকা যেখানে হস্তক্ষেপ করে,সেখানে জাতিসঙ্ঘও দুর্বল বৌদ্ধ ধর্মের মূলবানীজীব হত্যা কিরও নাঅহিংসা পরম ধর্ম মায়ানমারের বৌদ্ধরা সম্ভবতঃ মুসলমানকে জীব বলে গন্য করে না তাই মুসলমান হত্যা তাদের কাছে হিংসার মধ্যে পড়ে না আবার এমনই মজার ব্যপার যেমুসলমানদের উপর বর্বর হামলাকারী খুনী ইহুদী নেতা আইজাক রবিন এবং মায়ানমারের বৌদ্ধ নেত্রী অং সান সূচীকে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়
কবি নজরুল ইসলাম একবার লিখেছিলেন-
যারা যাত বড় ডাকাত-দস্যু জোচ্চোর দাগাবাজ
তারা তত বড় মানী সম্মানী জাতিসংঘেতে আজ
তাইতো দেখা যাচ্ছে সন্ত্রাসের উস্কানী দাতারা হয় সন্ত্রাস দমনকারী এবং অশান্তি সৃষ্টিকারিরা পায় শান্তিতে নোবেল পুরুষ্কার
বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশসমূহে রয়েছে নানা মতবাদের বিভাজন! এ কারণে একদল আরেক দলকে কাফের কিংবা নাস্তিক বলতে ছাড়ে নাএই কারণে কোনো ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডে একদল যখন নীরব ভূমিকা পালন করেপ্রতিবাদ করলেও পৃথকভাবে করেজোটবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদী হবার মানসিকতা তাদের নেই তাই একদল যখন বিরোধী শক্তির হাতে মার খাচ্ছেঅন্যরা তখন আনন্দে হাত তালি দিচ্ছে
আরে বাপুযারা আল্লাহকে মানোআল্লাহর কিতাব মানোহাদিস মানো,তারাই ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমান এটা তো পরিষ্কার দেশ ও সমাজে ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড চলতে থাকলে সবাই একজোট হয়ে কেন প্রতিবাদী হও নামতপার্থক্য নিয়ে যেখানে অন্যান্য ধর্মের লোকেরা নিজেদের মধ্যে কোন্দল করে শক্তি ক্ষয় করে নাতোমরা কেন করজাগতিক বিচারে কখনো রামের অপরাধে শ্যামের মুন্ড কাটা হয়কিন্তু পারলৌকিক বিচারে এমনই সুক্ষèভাবে খতিয়ে সুবিচার করা হবে,তাতে আব্দুলের অপরাধে সাবেদুলের গর্দান কাটা যাবার কোনো আশংকা নেই কেননাসেখানে ধূর্ত উকিল এবং মিথ্যাবদী সাক্ষী মিলবে না আর বিচারাসনে সমাসীন থাকবেন একমাত্র আল্লাহ তায়ালা যিনি বিশ্বজগৎ আর আসমান জমিনে যা কিছু  সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা
অতএবআমাদের মধ্যে মতামতের কিছু হের ফের থাকলেওযারা আল্লাহআল্লাহর রাসূলআল্লাহর কিতাব এবং তাতে যা কিছু লেখা আছেতার উপর বিশ্বাস রাখিতারা সবাই মুসলমান তাদের ধর্ম ইসলামতারা একজোট হয়ে প্রতিবাদ করি
যেসকল মুসলমান নামধারীরা আল্লাহআল্লাহর কিতাব এবং তাঁর রাসূল (সা.)কে নিয়ে কটূক্তি করে তবেই তোমাদের প্রতিবাদে কিছু কাজ হতে পারে নতুবা এ নিয়ে কেউ রাজপথে আন্দোলনে নেমে অহেতুক মার খেয়ে গুলিতে প্রাণ দিয়েআটক হয়ে জেলে গিয়ে পঁচলেতাতে ফলোদায়ক কিছু অর্জিত তো হবেই নাবরং তোমাদের নাম হবে জঙ্গী মুসলমান তারপর সপরিবারেসবান্ধবেসসাগরেদে মুসিবতের মধ্যে কালাতিপাত করতে থাকবে
পত্র-পত্রিকায় যে সব জিহাদী বই উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়তাদের নাম জানা যায় না তবে কুরআন পাকে জিহাদের কথা আছে আর লড়াই করো আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথেযারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করিও না নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না (সূরা বাক্বারা- ১৯০)
কুরআন পাকে জিহাদের আয়াত আরো আছে তবে দেশের নিরাপরাধ মানুষ মারার জন্য পেট্রলবোমাগ্রেনেড ইত্যাদি নিক্ষেপ করাকে জিহাদ বলা হয়নি কুরআন পাকে হাদীস ও ইসলামের ইতিহাসেও জিহাদ সম্পর্কে প্রচুর বর্ণনা রয়েছে সেইসব অতীত ঘটনার সাথেও বর্তমানের নিরপরাধ মানুষের উপর হামলা ও আক্রমণের সঙ্গে মেলে না সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কখনো জিহাদ নয় জিহাদ হচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অন্যায় আগ্রাসন দমন করার জন্য সুতরাং অন্যায় অপরাধের মোকাবেলা করাকেই জিহাদ বলেনিরপরাধ মানুষের উপর হামলা বা ক্ষমতা লাভ অথবা ব্যক্তি স্বার্থের জন্য লড়াই কখনো জিহাদ নয়
হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ শ্রীগীতার শুরুতে বলা হয়েছে কুরু ক্ষেত্রে ধর্ম ক্ষেত্রে সমবেতা যুযুৎসব অর্থাৎ- কুরু ক্ষেত্রে ধর্ম ক্ষেত্রে যুদ্ধার্থীরা সমবেতএই যুদ্ধে কুস্তীপুত্র অর্জুন অসম্মত তাই তার প্রতি শ্রীকৃষ্ণের উপদেশহতোবা প্রাপ্স্যসি স্বর্গংজিত্বা বা ভোক্ষ্যমে মহীম তস্পদুত্তিষ্ঠ কোন্ডেয় যুদ্ধায় কৃত নিশ্চয়: অর্থাৎ- নিহত হলে স্বর্গ পাইবেজয়ী হলে পৃথিবী ভোগ করবে তাহলে হে কুস্তীপুত্রতুমি যুদ্ধের জন্য কৃত নিশ্চিত হও (প্রস্তুত হও)
মহাভারতের যুদ্ধ হিন্দুদের ধর্ম যুদ্ধ আরএই মহাভারত থেকেই গীতার উৎপত্তি রামায়ণশ্রীচন্ডী আরো কিছু কিছু হিন্দু ধর্মীয় বইয়ে ধর্ম যুদ্ধের কথা আছে পাশ্চাত্যের মানুষ অনেকে ধর্মের ধার ধারে নাতা নিয়ে কোন্দলও নেই মুসলমান দলের অভ্যন্তরেই এই কোন্দল রয়েছেতাও নিজেদের মধ্যেকাফিরদের সঙ্গে নয় আত্মঘাতী মুসলমানই কাফিরদের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের মধ্যে সংগ্রাম তথা লড়াই জিইয়ে রেখে নিজেরাই শক্তিহীন হয়ে যাচ্ছে
বাংলাদেশ আজ ইসলামী ঐতিহ্য ও সহী আমল প্রায় নেই সুদবেপর্দা,ব্যভিচারজাতে বেজাতে বিয়েউলঙ্গ নাচগানকবর পূঁজামূর্তির ছড়া-ছড়ি মূর্তির গায়ে পুস্পস্তবক অর্পণ দেব-দেবী পূজার নামান্তর নারী-পুরুষ হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ-খ্রীস্টান মিলে ইফতার মাহফিলদোয়াকবর যিয়ারত অবাধে চলছে চলছে বেগানা নারী পুরুষে করমর্দন এ সবে ইসলামে সমর্থন না থাকলেও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে তা ঠেকাবে কে?ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে হিন্দুত্বের কোনো ঘাটতি নেই তাদের শিক্ষা-সাহিত্য সংস্কৃতিতে হিন্দু ঐতিহ্য পুরোপুরি রক্ষিত হচ্ছে আরআমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদি মুসলমানরা বাঙালি সংস্কৃতির নামে হিন্দুত্ববাদি ঐতিহ্য ধরে রাখতে আগ্রহী তাই নব বর্ষের উৎসববসন্ত উৎসবভালোবাসার উৎসব থাকবেই আর শিক্ষা-সাহিত্যেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ইসলামের নামে যা কিছু হচ্ছেতার অনেকই জগা খিচুড়ী পাকিয়ে হচ্ছেযা অমুসলমানদের মুখেও রোচে
আর এসব নিয়ে কথা বললেপ্রতিবাদ করলেশান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে হয়ে যায় জঙ্গীসন্ত্রাসী আর তখন পবিত্র কুরআন-হাদীসও হয়ে যায় জিহাদী বই এর চেয়ে ইসলাম অবমাননা আর কি হতে পারে!
অবস্থাটা এমন যেচুপ থাকলেও ইসলামের উপর আগ্রাসন বন্ধ নেইপ্রতিবাদ করলেও চলে আগ্রাসন একদিকে চলছে অনৈসলামিকতা,নাস্তিকতা ও নগ্নতার বিস্তারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাঅন্যদিকে চলছে ইসলামী সংস্কৃতিনিদর্শন ও চেতনাবোধের উপর দমন-পীড়ন ও একের পর এক আঘাত এমতাবস্থায় মুসলমানদের অনৈক্যপারস্পরিক বিবেদ ও শক্তি ক্ষয় ইসলাম বিদ্বেষী ও নাস্তিক্যবাদি শক্তির অসৎ উদ্দেশ্যকে আরো তরান্বিত করে দিচ্ছে চতুর্দিক থেকে ইসলাম ও প্রকৃত মুসলমানিত্বের উপর এমন আঘাত এদেশে এর আগে ঘটেছে কিনা জানা নেই জানি নাএদেশের মুসলমানদের হুঁশ কবে হবে
আল্লাহ এই দেশ ও দেশবাসীর প্রতি সহায় হোন আমীন



No comments:

Post a Comment